নদীর তীরবর্তী এলাকায় ৩ ফুটেরও বেশি জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

# সাগরে নি¤œচাপ #
প্রবাহ রিপোর্ট : সাগরে সৃষ্টি হওয়া নি¤œচাপ এখন ভারতে অবস্থান করছে। এর সঙ্গে দেশের উপরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি এবং নদীর তীরবর্তী এলাকায় ১ থেকে ৩ ফুট বেশি জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নি¤œচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে অমাবস্যা ও নি¤œচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসগুলোতে ১ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ছাড়াও মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, নি¤œচাপের কেন্দ্রস্থল, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গভীর নি¤œচাপে পরিণত হওয়ায় সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। নি¤œচাপটি আরও ঘনীভূত হওয়ায় এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুল মন্নান জানিয়েছেন, সমুদ্র উপকূল এবং আশেপাশের এলাকায় ভারী বৃষ্টি ও দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। লঘুচাপের প্রভাবে সাগরের জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সতর্কতার সঙ্গে গোসল করতে বলা হয়েছে। সৈকতে হাঁটু পানির নিচে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। সৈকতে লাল পতাকা চিহ্নিত এলাকায় গোসল করতে নিষেধ করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফ গার্ড কর্মীরা। তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি হওয়ায় টেকনাফের সঙ্গে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নৌ চলাচল বন্ধ রাখতে বলেছে উপজেলা প্রশাসন। এ ছাড়া মহেশখালী ও কুতুবদিয়া দ্বীপের সঙ্গে নৌযোগাযোগ সতর্কতার সঙ্গে করতে বলেছে উপজেলা প্রশাসন। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।