চুরির অপবাদে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন, দম্পতি আটক
প্রবাহ রিপোর্ট ঃ ঢাকার সাভারে চুরির অপবাদে শিশু গৃহকর্মীকে ছোট ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে এক দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন। এর আগে এদিন দুপুরে নির্যাতিত শিশুকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিষয়টিতে দুপুরেই নির্যাতনের শিকার শিশুর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আটকরা হলেন- সাভারের রাজাশন এলাকার কাজী ইসমাইল ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ। কাজী ইসমাইল ৪২তম বিসিএস ক্যাডার ও বরগুনা সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী শিশুর নাম মিম (১০)। সে সাভারের রাজাশন এলাকার ভাড়াটিয়া আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। তারা সাভারের বিরুলিয়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। অভিযোগ থেকে জানা যায়, কাজী ইসমাইল ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের পূর্ব পরিচিত। সেই সুবাদে মিমকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে নেন আটকরা। গত ১ বছর কাজ করানোর পরেও তারা ওই শিশুকে ঠিকমতো বেতন দেননি। সেই বেতনের টাকা চাইলে শিশুকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা। নির্যাতনের বিষয়টি শিশুর পরিবার যাতে না জানতে পারে সে জন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য করেন ওই দম্পতি। পরে গত শুক্রবার ভুক্তভোগী শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করে ভয়ভীতি দেখান আটকরা। পরে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শিশুটিকে ভর্তি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার। ভুক্তভোগী শিশু মিম জানায়, আমি ওই বাসায় প্রায় ১ বছর ধরে কাজ করছিলাম। ওই বাসায় যাওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন আমাকে আদর করেছে। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পরই আমাকে মারধর করা শুরু করেন তারা। সর্বশেষ আমাকে চুরির অপবাদ দিয়ে ছোট সরু ছুরির মাধ্যমে সারা শরীরে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেছেন। এছাড়া ব্যাট দিয়ে পায়ে ও মাথায় আঘাত করেছেন তারা। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ভুক্তভোগীর সারা শরীরে নতুন ও পুরাতন ভোঁতা এবং ধারালো অস্ত্রের ক্ষত আছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।