যশোরে জামায়াত নেতা সজল হত্যার ঘটনায় ৫ সদস্য আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার
যশোর ব্যুরো ঃ যশোরে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী ও জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম সজল হত্যার ঘটনায় জড়িত দুই আসামিসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় তাদের দখল থেকে হত্যা কান্ডে ও বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত একটি রিভলবার,একটি ওয়ান স্যুটারগান ও ১টি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার ৬ নভেম্বর ও বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর শহরতলীর খোলাডাঙ্গা গাজিরহাট বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালি থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর দুপুরে যশোর ডিবির পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম শহিদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান ,জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম সজলকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা তদন্ত শুরু করে যশোর ডিবি পুলিশের একটি টিম। তদন্ত চলাকালে খোলাভাঙ্গা গাজিরহাট বাজার থেকে তদন্তে প্রাপ্ত দুই আসামি সাদমান রহমান সাকিন ও আল-আমিন হোসেনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্যদের নাম প্রকাশ করে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে,খোলাডাঙ্গা (মফিজপাড়া) গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে রায়হান আহমেদ,খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের বর্তমানে যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা সরকারী ক্লিনিকের সামনে নানা আবুল বাশার বাবু এর বাড়ির আসাবুর রহমান হাসিবের ছেলে সাদমান রহমান সাকিন,খোলাডাঙ্গা গাজীর বাজার ইসমাইল হোসেনের ছেলে রিয়াদ হাসান, শহরের খড়কী সার্কিট হাউজপাড়ার বাবলু মোড়লের ছেলে আব্দুর রহমান সাগর, খোলাডাঙ্গা মফিজপাড়া আমজাদ হোসেনের ছেলে আল আমিন। পলাতক আসামীরা হচ্ছে, খোলাডাঙ্গার আলম শেখ এর ছেলে সাহমান সিদ্দিকি লাবিব ও একই গ্রামের টোকনের ছেলে স্বরন।
ডিবি পুলিশ প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে গ্রেফতারকৃত আসামিদের পূর্বের ধারণকৃত একটি ভিডিও ফুটেজ জব্দ করে । ফুটেজটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামী লাবিব, সাকিনসহ ৪/৫ জন একটি মাদক সেবনের আসরে চাকু ও রিভলবার নিয়ে প্রশিক্ষন নিচ্ছে। উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরে সাকিন এর তথ্য মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করে ভিডিওতে প্রাপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের আরও তিন সদস্য রায়হান আহমেদ, আব্দুর রহমান সাগর ও রিয়াদ হাসানকে গ্রেফতার করেন। আসামিরা সকলে যশোর শহরতলী ও শহরের খোলাডাঙ্গা ও খড়কি এলাকার বাসিন্দা।
গ্রেফতার করে আসামিদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক রায়হান এর বসতবাড়ির সিড়িপথের নীচ থেকে বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার সময় ২টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের নিয়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি লাবিব এর বাসায় অভিযান করে লাবিব এর শয়ন কক্ষে তল্লাশী করে হত্যা কাজে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশ আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আল-আমিন ও সাকিন নিজেদেরকে জড়িয়ে জামায়াত নেতা সজলের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১৩/১৪ জনের নাম প্রকাশ করে জানায় যে, ঘটনার ১৫/২০ দিন আগে এলাকার জনৈক ফখরুল ইসলাম এর এক স্বজনকে আসামী স্বরন ও রবিন পথরোধ করে ব্যাগ তল্লাশীর ঘটনায় ফখরুল ইসলাম বিষয়টি নিহত সজলকে নিয়ে প্রতিবাদ করে। এ সময় আসামি স্বরণ, লাবিব ও রবিনকে চড়থাপ্পর মারে নিহত সজল। উক্ত আক্রোশে আসামি স্বরণ, লাবিব ও রবিন সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করে সঙ্গীয় ১০/১২ জনের সহযোগীতায় গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নামাজে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে সজলকে গতিরোধ করে এলোপাতাড়িভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দ্বারা ২১টি আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। রক্তাক্ত সজলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সজলকে মৃত ঘোষনা করে। এই ঘটনায় আসামীদের বিরুদ্ধে এসআই মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাদি হয়ে যশোর কোতয়ালি থানায় করেন।