জাতীয় সংবাদ

কর্মসংস্থান তৈরিতে ৪৮ জেলায় প্রশিক্ষণ ফার্ম নিয়োগ

প্রবাহ রিপোর্ট : দেশের ৪৮ জেলায় ২৯৭ কোটি ১৬ লাখ টাকায় শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবকদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রশিক্ষণ ফার্ম হিসেবে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেডকে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে দেশের ২৮ হাজার ৮০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুব নারীদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ‘দেশের ৪৮ জেলায় শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার ৮০০ জন যুবক ও যুব নারীকে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেডকে প্রশিক্ষণ ফার্ম নিয়োগ দিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯৭ কোটি ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকা। উপদেষ্টা কমিটি প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়েছে। জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে এটি শেষ করতে চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেকটি জেলায় ৬০০ জন করে শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এক বছরে ৫০ জনের চারটি ব্যাচ পাবে এই প্রশিক্ষণ। তাদেরকে দিনে ২০০ টাকা নগদ ভাতা এবং ৩০০ টাকার খাবার দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহীদের কম্পিউটার সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান থাকতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী কর্ম প্রত্যাশী নারী ও পুরুষ এই প্রকল্পের প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন।
ভর্তি কীভাবে : প্রতি ব্যাচে ভর্তির জন্য অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আগ্রহী প্রশিক্ষণার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বাছাই পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে নির্বাচন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী বাছাইয়ের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে একটি প্রশ্ন ব্যাংক থাকবে। প্রতিটি ব্যাচের জন্য প্রশ্ন নবায়ন করা হবে। এই নবায়নের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালককে সভাপতি ও প্রকল্প পরিচালককে সদস্যসচিব করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে। জেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে সভাপতি এবং সহকারী পরিচালককে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের কমিটি প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
প্রশিক্ষণে কী কী থাকবে : এই প্রশিক্ষণে ফ্রিল্যান্সিংয়ের উপযুক্ত একটি বেসিক ইংরেজি শেখানোর কোর্স থাকবে। এছাড়াও কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন, কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে হয়, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সফট স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হবে।
প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষিত বেকারদের ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা প্রদান করে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। প্রশিক্ষণ নেওয়ার মাধ্যমে তারা ঘরে বসেই বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজ করতে পারবেন, যা দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ খুলে দেবে। প্রশিক্ষণটি বিনামূল্যে দেওয়া হবে।
প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া : প্রতিটি জেলায় দুটি ল্যাব স্থাপন করা হবে, যেখানে ২৫টি কম্পিউটার এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা থাকবে। একেকটি ল্যাবে ২৫ জন করে প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবে। প্রতিটি ব্যাচে ৫০ জন ভর্তি হতে পারবেন। প্রশিক্ষণের সময়কাল হবে তিন মাস।
প্রশিক্ষক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়া : ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। তবে কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি প্রথম হয়। অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ আইটি ইনস্টিটিউট, এসইও এক্সপেইট বাংলাদেশ লিমিটেড এবং নিউ হরাইজনস সিএলসি অব বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button