ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় আরো একটি মামলা দায়ের

# বাগেরহাটে ২০২৪ এর ৪ আগষ্ট #
# সাবেক এমপি, এমপি পুত্র, পুলিশ, আইনজীবিসহ আ’লীগের ৬৭ নেতাকর্মী আসামী #
বাগেরহাট প্রতিনিধি ঃ ২০২৪ এর ৪ আগষ্ট বাগেরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটয়নায় সাবেক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, এমপি পুত্র, পুলিশ, আইনজীবী ও ব্যবসায়ীসহ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগি সংগঠনের ৬৭ জন নেতাকর্মীর নাম পরিচয় উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১৫০ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা এ মামলাটি আমলে নিয়ে বাগেরহাটের বিচারিক হাকিম আদালতের সিনিয়র বিচারক আজমীরা ফেরদৌসী আমলে নিয়ে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত সুত্র জানায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোপালকাঠি গ্রামের মিরাজ সেখ নামে এক ব্যক্তি গত সোমবার আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। বাদীর দায়ের করা ওই মামলায় বলা হয়েছে, ২০২৪ এর ৪ আগষ্ট ক্ষমতাসিন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের আদালত সম্মুখ রাস্তায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মিছিল নিয়ে আসে। এ সময় আন্দোলন রত ছাত্র-জনতার উপর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, বোমা নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, লোহার রড দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে এবং তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। আর এ হামলায় আন্দোলনকারীদের অনেকেই কমবেশি আহত হন। এ মামলার আসামিরা হলেন, বাগেরহাট জেলা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, একই আসনের সাবেক এমপি মীর শওকাত আলী বাদশা ও তার পুত্র ঠিকাদার মীর রহমত আলী, বাগেরহাটের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আসাদুজ্জামান, আরেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাসুদ রানা, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি) মো. মামুনুর রশীদ, বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি মোঃ সাইদুর রহমান, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক (ডিআই-১) সৈয়দ বাবুল আক্তার, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকট. ভূঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন, তার স্ত্রী মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী অ্যাড শরীফা খানম, তাদের মেয়ে নওসিন শারমিলি, অ্যাডঃ তাজিনুর রহমান পলাশ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌর সভার সাবেক মেয়র খান হাবিবুর রহমান, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দীন, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়রের ভাতিজা খান আবু বক্কর, মেয়রের শ্যালক ঠিকাদার নুরুল ইসলাম খোকা ও তার ছেলে এহসানুল হক শুভ, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি অ্যাডঃ লুনা সিদ্দিকী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ফজলে সাঈদ ডাবলু, তাতী লীগ সভাপতি এ বাকী তালুকদার, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার নাহিয়ান আল সুলতান ওশান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী তাপস কুমার সাহা, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপির পিএস ফিরোজুল ইসলাম ও মীর শওকাত আলী এমপির দুই ভাই ডাবলু ও লাল্টুসহ ৬৭ জনের নাম পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে। চাঞ্চলকর এ মামলাটির নথির বরাত দিয়ে বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এস এম মাহাবুব মোর্শেদ লালন সংবাদ কর্মীদের জানান, ‘জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট বাগেরহাট আদালত চত্বরে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জুলাই আগস্টে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন আন্দোলনে নির্যাতিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছেন। আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।