সম্পাদকীয়

রমজানে নিত্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে

পবিত্র রমযান মাসে খেজুর, ডাল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। এজন্য ব্যবসায়ীরা রমযান আসার আগেই নিত্যপণ্য আমদানিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এবার রমজান আসতে এখনো তিন মাস বাকি। তাই রমজানে আমদানি নির্ভর পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে তারা প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলমি) খোলা নিয়ে জটিলতা পড়েছেন। যদিও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ডলার সংকট সমাধানের উদ্যেগ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর এফবিসিসিআই আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা সতর্ক করে বলেছেন, সময় মতো এলসি খোলা না গেলে পণ্য আমদানি করতে সমস্যা হবে এবং সঠিক সময়ে পণ্য দেশে না এলে রমযান মাসে পণ্য সরবরাহ ব্যহত হতে পারে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে এলসি খুলতে ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। শতভাগ মাজির্ন দিয়েও এলসি খুলতে পারছেন না অনেক ব্যবসায়ী। বিশেষ করে বড় আমদানিকারকদের ক্ষেত্রে ব্যাংক ডলার সংগ্রহে কিছুটা হলেও সুবিধা দিচ্ছে। এজন্য ব্যবসায়ীরা তেল ও চিনির মতো আমদানি নির্ভর পণ্যের জন্য ডলারের কোটা সংরক্ষণের দাবি জানাচ্ছেন। সেই সাথে জ¦ালানি সংকট নিরমনে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন। আমদানিতে প্রতি ডলারের নির্ধারিত মূল্য ১১০ টাকা। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ; অনেক ক্ষেত্রে আমদানির জন্য ১২৩ থেকে ১২৪ টাকায় ডলার কিনতে হচ্ছে। ব্যাংকগুলোতে অনেক সময় ডলার পাওয়া যায় না বলেও অনেক ব্যবসায়ীর অভিযোগ। তাদের অভিযোগ খ-ন করার সুযোগ নেই। কারণ বেশ কিছু দিন থেকেই বাংলাদেশে ডলার সংকট চলছে। ডলারের মূল্য বেধে দিয়েও ডলারের চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশে^ই নিত্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। রমযানে খেজুরের চাহিদা বেশি থাকে। ভিউনিশিয়া-আলজেরিয়া থেকে খেজুর আনতে দু’ মাস সময় লাগে। সেক্ষেত্রে এলসি খুলতে না পারলে তা আমদানি করা কি ভাবে সম্ভব হবে? অন্যদিকে খেজুর আমদানিতে শুল্ক কয়েকজন বাড়ানো হয়েছে। রমযান আসার আগেই ছোলা বুট ও অ্যাংকর ডালের দাম বেড়েছে। অথচ আমদানি কারকরা ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে পারছেন না। বাজার বড় আমদানিকারকদের হাতে চলে গেছে। পবিত্র রমযান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা জরুরি। এজন্য ডলারের প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের এখনই উদ্যেগ নিতে হবে। সেই সাথে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে নজরদারি বাড়াতে হবে। তা না হলে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেতে পারে। তবে আসার কথা ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই নেতারা আশ্বস্ত করেছেন, কোনো ব্যবসায়ী পণ্য মজুতের সাথে জড়িত আছেন, এমন প্রমান পাওয়া গেলে এবং তাকে থামানো না গেলে প্রয়োজনে ব্যবসায়ীরাই তাদের প্রশাসনের কাছে সোদপর্ন করবেন। আমরা কথা ও বাস্তবতায় মিল চাই। সেই সাথে প্রত্যাশা রইলো সাংগঠনিক ভাবে ব্যবসায়ীরা ডলার সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে সরকারের সাথে কার্যকর যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন এবং সময়মতো আমদানি নির্ভর পণ্যগুলোর বাজার স্থিতিশীল রাখবেন। ব্যবসা শুধু মুনাফার জন্য নয়; জনসেবায় জন্যও। আমরা মনে করি নির্বাচনের চলমান সময়ে সরকার জনকল্যাণে যে কোনো উদ্যোগ নিতে পিছ পা হবে না। প্রয়োজন সরকারকে সহযোগীতা করা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button