অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে

এসএসসিতে হাজার হাজার পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত
মেধা যাচাইয়ের লড়াইয়ে প্রতিবছরই এসএসসি পরীক্ষার হলে বসেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী। এবছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখের বেশি হলেও গত বৃহস্পতিবারের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৯৯২ জন। এর মধ্যে অংশ নিয়েছে ১৭ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী। পরীক্ষায় প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার অনুপস্থিত ছিল ১৯ হাজার ৩৫৯ জন পরীক্ষার্থী। তৃতীয় দিন গত মঙ্গলবার অনুপস্থিত ছিল ২১ হাজার ৬২৩ জন পরীক্ষার্থী। দুই দিনে মোট ৪০ হাজার ৯৮২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ২০২৩ সালে ৩১ হাজার ৪৪৭ এবং ২০২২ সালে প্রায় ৩৪ হাজার শিক্ষার্থী প্রথম দিনে অনুপস্থিত ছিল। কেন প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে অনুপস্থিত থাকে? এ বিষয়ে কি কোন নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে? এর সঠিক উত্তর কি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আছে? এবছর প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত ছিল মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে, ৭ হাজার ৬৬০ জন। এ ছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ২ হাজার ৩৪৫ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ১৮১ জন, কুমিল্লায় ১ হাজার ৩৭০ জন, যশোরে ১ হাজার ১৩৩ জন, চট্টগ্রামে ৮০৯ জন, সিলেটে ৫৬৪ জন, বরিশালে ৬৮২ জন, দিনাজপুরে ১ হাজার ৪৩ জন এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে ৬০৪ জন অনুপস্থিত ছিল। কারিগরি বোর্ডে অনুপস্থিত শিক্ষার্থী ১ হাজার ৯৬৮ জন। এ ছাড়া তৃতীয় দিনে সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত ছিল মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে, ৮ হাজার ৫৯০ জন। এ ছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ২ হাজার ৭৯৯ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ২৯৮ জন, কুমিল্লায় ১ হাজার ২০২ জন, যশোরে ১ হাজার ২৩০ জন, চট্টগ্রামে ১ হাজার ১৩৩ জন, সিলেটে ৬৪৯ জন, বরিশালে ৬৯৭ জন, দিনাজপুরে ১ হাজার ১৩০ জন এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে ৬৫৪ জন অনুপস্থিত ছিল। কারিগরি বোর্ডে অনুপস্থিত শিক্ষার্থী ২ হাজার ২৪১ জন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জীবনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তর। এই স্তর পেরিয়ে একজন শিক্ষার্থীকে পরে স্তর বা উচ্চমাধ্যমিকে উঠতে হয়। একজন মানুষকে উচ্চ শিক্ষিত হতে হলে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাশ করার বিকল্প নেই। কিন্তু ফরম পূরণ করার পরও প্রতিবছরই পরীক্ষা না দিয়েই হাজার হাজার শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকছে বা শিক্ষা জীবন থেকে ঝড়ে পড়ছে। কেন এই পরিস্থিতি মুখোমুখি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এর পেছনে অন্যতম কারণ অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বও কম নয়। সময়মত মনিটরিং ও পরিচর্যার অভাব রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ধারাবাহিক ভাবে অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ রাখে তাহলে এই সমস্য অনেকটা দূর করা সম্ভব। তবে সচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে অভিভাবকরা। তাদের অচেসচেতনার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ হয়ে থাকে। তাই সবার আগে সবচেয়ে বেশি সচেতন হতে হবে অভিভাবকদের।