বরাদ্দ বাড়ানোর বিকল্প নেই

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশা
বাংলাদেশে অর্থনীতির ভিবিন্ন খাতকে বেশি মনোযোগ দিতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত। উন্নয়ন খরচে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত অগ্রাধিকারের তালিকায় বরাবরের মতো বেশ পিছিয়ে আছে। উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের দিক থেকে শীর্ষ তিনটি খাতের মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত নেই। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এ দুই খাতের বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারপরও বরাদ্দ বাড়ছে না। উল্টো সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এ দুই খাতে বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। এখন শিক্ষা খাতে জিডিপির ২ শতাংশের মতো খরচ করা হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য খাতে তা ১ শতাংশের কম। যদিও অর্থনীতিবিদ ও গবেষকেরা অনেক দিন ধরেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করছেন। এ দুই খাতে বরাদ্দ বাড়ালে সেটা জাতির ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা গেছে, এবার সংশোধিত এডিপির আকার কমছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি কম থাকায় শিক্ষা খাতে সাড়ে ১২ হাজার কোটি এবং স্বাস্থ্যে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত উন্নয়নে সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে এটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেখানে অর্থনীতিবিদেরা অনেক দিন ধরেই এই দুটি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন, সেখানে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্ত আত্মঘাতীমূলক। বুঝতে বাকি থাকেনা ‘শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত একটি দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে গেছে। যার কারণে প্রকল্পের কাজ ঠিকমতো চলছে না, তাই সরকারের উচিত তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। কেননা প্রকল্প কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে তো মানুষ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হতে পারেন না।শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এ দুটি খাতের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বীকার করছেন না। কিন্তু কেবল অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করলেই তো হবে না, সেসব সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য যে মানবসম্পদ দরকার, সে জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর বিকল্প নেই। আশা করি, নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন এবং সংশোধিত বাজেটে এ দুই খাতে আগের চেয়ে বেশি বরাদ্দই বহাল রাখবেন। লক্ষ্যাভিমুখী সুপরিকল্পিত সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকারকে তা দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। নয়তো বিলম্বিত পদক্ষেপ শুধু জনদুর্ভোগকে দীর্ঘস্থায়ী করবে না, বাস্তবায়নও কঠিন করে তুলবে।