দেশের উন্নয়নে নারীর ক্ষমতায়ন কতটা জরুরি

গত ৫০ বছরে, নারীরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছে, বিশেষ করে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে। সাম্প্রতিক দেশগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকা হিসেবে গড়ে ওঠা পোশাক শিল্পের বিকাশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবদান অস্বীকার করা যায় না, তবে পোশাক শিল্পের বাইরে নারী শ্রমিকরাও এই শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিল্প উন্নয়ন. কৃষি বা সেবা খাত, বিশেষ করে অকৃষি বা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, যদিও তাদের অবদান কম আলোচিত। তবে অর্থনীতিতে নারীদের ভূমিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল গৃহকর্মে তাদের অংশগ্রহণ, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক মানদ-ে স্বীকৃত বা বিবেচনায় নেওয়া হয় না। তাই নারীর ক্ষমতায়ন উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নারীর ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করার মাধ্যমে, আমরা সবার জন্য একটি ন্যায্য, আরও সমান এবং আরও সমৃদ্ধ বিশ্ব তৈরি করতে পারি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ছাড়াও প্রবাসী নারীরা অন্তত দুই দশক ধরে রেমিটেন্সের মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। ২০০৪ সালে অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যা ছিল ১ শতাংশেরও কম, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের অবদান সম্পর্কে, এটা মনে রাখা জরুরী যে অংশগ্রহণ শুধুমাত্র শ্রমবাজার এবং কর্মক্ষেত্রেই নয়, প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও, অর্থাৎ। ঘন্টা তুলনামূলকভাবে উচ্চ-উৎপাদনশীল চাকরিতে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি নারী কর্মশক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর একটি চমৎকার সুযোগ দেয় এবং এর ফলে অর্থনীতিতে নারীর অবদান বৃদ্ধি পায়। মূলধারার শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণে আর্থ-সামাজিক বাধা দূর করা। এই প্রেক্ষাপটে, বাল্যবিবাহ এবং সন্তান জন্মদানের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারী হস্তক্ষেপের বিকল্প নেই। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত ও সুসংগঠিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এছাড়াও, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কিন্ডারগার্টেন স্থাপন, স্বল্প খরচের মতো ব্যবস্থার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টিকারী প্রতিবন্ধকতা দূর করার চেষ্টা করা জরুরি। আমরা চাই, সমাজে প্রতিটি ক্ষেত্রই নারীদের চলাচল এবং বসবাসের জন্য হবে নির্বিঘœ। যার নিশ্চিত পরিবেশ আমাদেরই তৈরি করতে হবে। নারীর কর্মক্ষেত্র আরো বেশি নির্বিঘœ করতে হবে। ২০৪১ সালে উন্নত দেশের যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে চলেছে তা পূরণ করতে হলে পুরুষের সঙ্গে নারীকেও এগিয়ে যেতে হবে।