সম্পাদকীয়

অস্থির ফলের বাজার, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

উচ্চমূল্যের বাজারে হিসাব মেলাতে বেহাল দশা সাধারণ মানুষের। চলছে মাহে রমজান মাস। রমজানের ইফতারে যেকোনো একটি ফল রাখার চেষ্টা থাকে সব শ্রেণির মানুষের। কিন্তু বাজারে দেশি ও আমদানি করা সব ধরনের ফলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ফলে এবার বেশিরভাগ মানুষকে ফল ছাড়াই ইফতার করতে হচ্ছে। এখন দেশি ফলও সাধারণের নাগালের বাইরে। এর কারণ সরকারের শুল্কারোপের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের অতিমাত্রায় মুনাফা অর্জন। রমজানকে ব্যবসায়ীরা সুযোগ হিসেবে নেন এবং কারণ ছাড়াই ফলের দাম বাড়ান। অন্যান্য পণ্য কিছুটা মনিটরিং করা হলেও ফলের বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। রাজধানী ঢাকায় ফলের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ৎ বাদামতলী, যাত্রাবাড়ি পাইকারি আড়ৎসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজান উপলক্ষ্যে দেশি ও আমদানি করা সব ধরনের ফলের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে খেজুর, আপেল, কমলা ও আঙুরের দাম। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বাজারে সাধারণ মানুষের সংসার চালাতে এমনিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার মধ্যে ইফতারে বেশি দামের ফল রাখার উপায় নেই। কেউ যদি ফল রাখেনও সেটি হবে ‘বিলাসিতা’। আর ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার আমদানি করা ফলকে বিলাসী পণ্যের অন্তর্ভুক্ত করে ২০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে। সম্প্রতি আরো দুটি ফলে নতুন করে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া রমজানের কারণে ফলের চাহিদাও বেড়েছে। এ কারণে ফলের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। যেখানে ফলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। এই দুর্মূল্যের বাজারে তারা সংসার চালাবে নাকি বিলাসিতা করে ইফতারে ফল খাবে? তাই রমজান মাস উপলক্ষ্যে সরকার সব ধরণের ফল আমদানিতে শুল্ক কমালে রোজাদারগণ ইফতারে ফল খেতে পারবেন। সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে এ সময় দেশি ফলের বাজারও অস্থির হয়ে ওঠে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, একই মানের ফল একেক এলাকায় একেক দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এসব বিষয় তদারকি সংস্থার দৃষ্টি এড়িয়ে যায় কী করে? কেউ ফলের বাজার অস্থির করার চেষ্টা করলে তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধে অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এবং দেশে বিদেশি ফলের উৎপাদনেও জোর দিতে হবে। ভবিষ্যতে আমদানি কমাতে বিদেশি ফল চাষে আগ্রহী চাষিদের প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া দরকার। শুল্ক না কমলে এসব ফলের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। শুল্ক কমলে দাম এমনি কমে যাবে। এর মাঝে বাজারে একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে ফলের দাম নিয়ে। সেটি শক্ত হস্তে দমন করলে ফলের দাম কমে যাবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button