সম্পাদকীয়

কিউলেক্স মশার দাপট বাড়ছে : অধিক সচেতনতা জরুরি

রাজধানীতে কিউলেক্স মশার প্রকোপ ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। বস্তুত বাসাবাড়ি, অফিস, বাজার-সর্বত্রই মশার উপদ্রব বেড়েছে। গ্রীষ্মকাল আসার আগেই কিউলেক্স মশার ঘনত্ব বেড়েছে রাজধানীতে। কোনো কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে মশার বিস্তার। গবেষণা বলছে, জানুয়ারি মাসের তুলনায় চলতি মার্চ মাসে কিউলেক্স মশার পরিমাণ ৪০ শতাংশ বেড়েছে। রাজধানীর দুই সিটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মশা বেড়েছে উত্তর সিটিতে। এই সিটির দক্ষিণখান ও উত্তরা এলাকায় মশার দাপট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ডোবা-নালা কম থাকায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কিউলেক্স মশার সংখ্যা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চেয়ে কম। গবেষকরা বলছেন, সংশ্লিষ্টরা যথাসময়ে নজর দিলে মশার ঘনত্ব কমে আসত। এ পর্যন্ত যে মশা ধরা পড়েছে, তার ৯৯ শতাংশই কিউলেক্স মশা। বাকি ১ শতাংশের মধ্যে এইডিস, অ্যানোফিলিস, আর্মিজেরিস ও ম্যানসোনিয়া মশা রয়েছে বলে জানা গেছে। কীটতত্ত্ববিদেরা জানান, দেশে মশা আছে প্রায় ১২৩ প্রজাতির। এর মধ্যে ১৬ প্রজাতির মশার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বছরজুড়ে যে কয়েক প্রজাতির মশা থাকে, তার মধ্যে কিউলেক্স মশা ৯৫ শতাংশের বেশি। ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগের জন্য কিউলেক্স মশা দায়ী, এটি প্রাণঘাতী নয়। তবে এই মশা মানুষকে প্রচুর কামড়ায়, বিরক্তির উদ্রেক করে। এ ছাড়াও কিউলেক্স মশার কামড়ে চর্মরোগও হয়ে থাকে। আর এ মশার ‘গুন গুন’ শব্দ ও কামড় অস্বস্তিকর। বেশি উপদ্রবের সময় স্বস্তিতে কোনো কাজ করতে পারে না মানুষ। নগরবাসীকে রোগ-ব্যাধি ও অস্বস্তি থেকে পরিত্রাণ দিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের এ বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। মশার উৎপাত থেকে বাঁচতে কয়েল, অ্যারোসল ব্যবহার করা হচ্ছে যা মানব দেহের জন্যও ক্ষতিকর। প্রায় সব ঘরেই মশা মারার ব্যাট রাখা হচ্ছে। কেউ কেউ মশা প্রতিরোধে বাসার জানালায় লোহার জালি যুক্ত করেছেন। এরপরও কমছে না মশার দাপট। রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকার বক্স-কালভার্টগুলোয় প্রচলিত পদ্ধতিতে মশার ওষুধ ছিটানো যায় না। এছাড়া বিভিন্ন আবর্জনায় রাজধানীর ড্রেনগুলো ভরাট থাকে; এতে পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হয়। এ জমাটবদ্ধ পানিতে কিউলেক্স বংশবিস্তার করছে। মশার এসব প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। বাসাবাড়ি ও এর আশপাশ এলাকা সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে সরকারি-বেসরকারি এবং ব্যক্তি পর্যায়ের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button