সম্পাদকীয়

ফিলিস্তিনে আর কতদিন চলবে এই মানবতাবিরোধী অপরাধ?

ফিলিস্তিনে নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলিরা গণহত্যা চালিয়েই যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের কারণে তা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই হত্যার শিকার বেশিরভাগই নারী ও শিশু যা কিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নির্মূলের নামে ইসরাইল গাজায় যে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে, তা বন্ধে বিশ্বরাজনীতির কোনো পক্ষকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। জাতিসংঘও এ ক্ষেত্রে অসহায়। গণহত্যা বন্ধের উদ্যোগ বিশ্বনেতাদের বক্তৃতা ও বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ আছে। গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনিদের নির্বিচার হত্যা করা হচ্ছে, তাঁদের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় গাজায় ইসরাইলি বাহিনী এখন পর্যন্ত সাড়ে ২৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে শিশু রয়েছে ১০ হাজারের বেশি। শুধু ধর্মীয় পরিচয় মুসলমান হওয়ায় ফিলিস্তিনে আন্তর্জাতিক কোনো আইন কার্যকর হয়নি। ইসরাইলিরা মারণাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়িতে বীভৎস হামলা চালিয়েছে। বাদ যায়নি হাসপাতাল, ত্রাণকেন্দ্র, আশ্রয়শিবির। এমনকি বহির্বিশ্বে থেকে ত্রাণ নিয়ে আসা সেসছাসেবকরাও এই বর্বর হামলা থেকে রেহাই পায়নি। ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ইসরাইলি হত্যার অবসান এবং অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধের অবসানের দাবিতে পথে নেমেছে পৃথিবীর মানবতাবাদী মানুষ। আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে ইস্তাম্বুল থেকে প্যারিস এবং লন্ডন পর্যন্ত পুরুষ মহিলা এবং শিশুরা ইসরাইলি গণহত্যা এবং তার সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তারা। এমতাবস্থায় ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গুলোর এগিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের এ বর্বরোচিত গণহত্যার বিচার চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করেছে। সর্বপ্রথম ফিলিস্তিনে বেসামরিক নাগরিক হত্যার হোলিখেলা বন্ধ করতে হবে। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর করে ইসরাইলকে পৈশাচিক হামলা থেকে সরে আসতে বাধ্য করতে হবে। এর সাথে ফিলিস্তিনিদের একটি নিরাপদ আবাসভূমি রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। গাজায় খাদ্যের তীব্র সংকট বিরাজ করছে এবং জনগণ অনাহারে রয়েছে। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে। যত দ্রুত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নির্মিত হবে, তত দ্রুত মনুষ্যত্ব রক্ষিত হবে এবং তত দ্রুত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে। তাই এই সংকটপূর্ণ সময়ে গোটা মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্যালেস্টাইনে গণহত্যা বন্ধের এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে ফিলিস্তিনে এই হত্যা তা-ব বন্ধ করা সম্ভব হবেনা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button