প্রচন্ড গরমে বিদ্যুত থেকে বঞ্চিত গ্রামবাসী?

প্রচন্ড গরমে জন-জীবন অতীষ্ট হয়ে পড়েছে। গরম থেকে স¦স্তী পেতে মানুষ বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল থাকে। কিন্তু এই অসহনীয় গরমেও দেশের কিছু অংশ মানুষ বিদ্যুাত থেকে বঞ্চিত থাকে। বলছি গ্রাম অঞ্চলের মানুষের কথা। শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুাত থাকলেও, সেই তুলনায় গ্রামে বেশির ভাগ সময় লোডসেডিং থাকে। তাহলে প্রশ্ন হলো গরম কি শুধু শহরের মানুষের কাছেই সীমাবদ্ধ? গ্রামের মানুষের কি গরম নেই? জানা যায়, এপ্রিলের শুরুতে দেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের কোথাও কোথাও দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। গরমে চাহিদা বাড়লেও জ¦ালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট। গত বুধবার দিনের বেলায় সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। ওই সময় সরবরাহ ঘাটতি ছিল ২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি, যা লোডশেডিং দিয়ে পূরণ করা হয়েছে। এর পুরোটাই করা হয়েছে মূলত ঢাকার বাইরে, দেশের বিভিন্ন গ্রাম এলাকায়। আগের দিন দিবাগত মধ্যরাতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮২৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল। বিদ্যুৎ বিভাগ ঢাকায় লোডশেডিং নেই দাবি করলেও বাস্তবতা ভিন্ন। অনেক এলাকায় দিনে কয়েক বার বিদ্যুৎ চলে যায়। অন্যদিকে ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরের বাইরে গ্রামাঞ্চলের অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। কোথাও দিনে সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে জনজীবন যেমন বিপর্যস্ত, তেমনি কৃষি ও শিল্পের উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। দফায় দফায় বাড়িয়েও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না হওয়ার পেছনে আছে অপচয়-দুর্নীতি, আছে সরকারের ভুল নীতিও। বিদ্যুৎ বিভাগ ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রাখলে গ্রামাঞ্চলের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। গ্রীষ্মের শুরুতেই যদি প্রতিদিন তিন ঘণ্টা থেকে সাত ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়, মে-জুন মাসে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হবে। সরকার শহরে লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় রেখেছে সম্ভবত বিক্ষোভের ভয়ে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনে রাখা উচিত, গ্রামের মানুষও ক্ষুব্ধ হতে জানে। অতীতে তারা বিদ্যুৎ-সারের দাবিতে আন্দোলন করে জীবন দিয়েছে। সে রকম পরিস্থিতি হোক, সেটা কারও কাম্য নয়। যাতে গ্রামের মানুষ ঠিক মত বিদ্যুত পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। বিদ্যুত অপচয় রোধে সকলকে সচেতন করতে হবে। দুর্নীতি বাজদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে জ¦ালানি ব্যবস্থা বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলে গ্রামের মানুষের মাঝে স¦স্তি মিলবে।