নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করুন

চলমান তাপদাহ থেকে শিগগিরই মুক্তির কোনো আভাস নেই। বরং তাপমাত্রা আরো বাড়বে বলে আভাস দিয়ে যাচ্ছে আবহাওয়া অফিস। এরই মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিচ্ছে তীব্র লোডশেডিং। গত ২২ এপ্রিল দেশে ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। যা এ যাবৎকালে দেশের সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন। কিন্তু উৎপাদন বাড়লেও তীব্র তাপদাহের মধ্যে সারাদেশে বেড়েছে লোডশেডিং। দেশব্যাপী লোডশেডিং ক্রমেই দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এতদিন রাজধানী ছাড়া দেশের সবখানেই অসহনীয় লোডশেডিং চললেও কয়েকদিন ধরে ঢাকার বেশ কিছু এলাকা এই লোডশেডিঙের ভোগান্তি বাড়ছে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় বর্তমানে ঢাকায় ৪০০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট ঘাটতি আছে বিদ্যুতের। যে কারণে এসব এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। কিন্তু এভাবে তাপদাহ চলতে থাকলে বিদ্যুতের চাহিদা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকবে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) এক রেকর্ডে দেখা যায় ২৪ এপ্রিল দেশে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। পিডিবি ও পিজিসিবি’র ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ছুটির দিনে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন উৎপাদিত হয় ১২ হাজার ৬৪৭ মেগাওয়াট। আর সর্বোচ্চ উৎপাদিত হয় ইভনিং পিক আওয়ার রাত ৯ টায় ১৫ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট। শুক্রবার রাত ৮ টায় লোডশেডিং ছিলো ৩৮৯ মেগাওয়াট, রাত ৯ টায় ৩০৬ মেগাওয়াট, রাত ১০ টায় ৩৫২ মেগাওয়াট, রাত ১১টায় ৪৬২ মেগাওয়াট, রাত ১২টায় ৮১৭ মেগাওয়াট, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১ টায় ১৫শ ৩৫ মেগাওয়াট, রাত ২টায় ১৫শ ৫৪ মেগাওয়াট, রাত ৩ টায় ১৪শ৯৫ মেগাওয়াট, রাত ৪টায় ১৪শ ১৭ মেগাওয়াট, ভোর ৫ টায় ১৩শ৩৩ মেগাওয়াট আর ভোর ৬ টায় ১২শ১৩ মেগাওয়াট। এরপর লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াটের নিচে নামতে শুরু করে। এই বিদ্যুতের ঘাটতির কারণ হিসেবে দেখা যায় গ্যাসের সঙ্কট। বিশেষ করে যে বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলো প্রাথমিক জ¦ালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে, গ্যাস সংকটের কারণে সেগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে উৎপাদন হচ্ছেনা চাহিদা মত বিদ্যুৎ। শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে তারপর সাধারণত গ্রামাঞ্চলে সরবরাহ করা হয় কিন্তু এখন সেই শহরেই ঠিক ভাবে কাক্সিক্ষত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছেনা ফলে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে অসহনীয় পর্যায়ে। দেখা যাচ্ছে চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎও গ্রাম্য এলাকাগুলো পাচ্ছেন না। ফলে কিছুকিছু এলাকায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিংও হচ্ছে। এমতাবস্থায় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এমনটাই আশা আমাদের সবার।