সম্পাদকীয়

রাতের আঁধারে বেপরোয়া দুর্বৃত্ত: প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে

গত জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপের মুখে পতন হয় স্বৈরাচার সরকারের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশ সরকার শূন্য হয়ে পড়ে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও দুর্বলতা লক্ষণীয় ছিল। ফলে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, আধিপত্য ইত্যাদি বেড়েই চলছে। এতে সাধারণ মানুষ রয়েছেন আতঙ্কে। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে রাজধানীতে রাতের আঁধারে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছেন অপরাধীরা। রাত বাড়লে ভয়ংকর হয়ে উঠছে রাজধানী। ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে অহরহ। আধিপত্য বিস্তার, এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে সন্ত্রাসীরা রাতকেই বেছে নিচ্ছে। রাজধানীর অপরাধীরা রাতে ভীষণ সক্রিয়। এতে ঢাকার জনমনে তৈরি হচ্ছে আতঙ্ক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকা থেকে জানা যায়, কিছুদিন আগে রাজধানীর মুগদায় বখাটের ধাড়ালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন এক যুবক। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার দুই ভাই। রাতে দোকান বন্ধ করে তিন ভাই একসঙ্গে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর হামলা চালায় এবং ছুরিকাঘাত করে। এছাড়াও একই সময় রাজধানীর বনশ্রীতে কাঁচাবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে গুরুতর আহত হন চারজন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হামলার আগে বিষয়টি পুলিশকে জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখের টেকে দুর্বৃত্তরা ঘর থেকে ডেকে নেয় এক তরুণকে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ছুরিকাঘাত করা হয় তাকে। এর আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর জনপদ মোড়ে দায়িত্বরত এক ট্র্যাফিক পুলিশ কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। শুধু মুগদা বা বনশ্রী নয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় না থাকায় হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে গোটা রাজধানী জুড়েই। ঢামেক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাত আটটা থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত ৫৮ জন আহত ভর্তি হয়েছেন ঢামেক হাসপাতালে। যার অধিকাংশ সংঘাত সহিংসতায় আহত। অধিকাংশ ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পুলিশের টহল না থাকায় রাজধানী ঢাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। রাত বাড়লে ভয়ংকর হয়ে উঠছে রাজধানী। ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে গত জুলাইয়ে স্বৈরাচার সরকার পতন করা হয়েছে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে। তবে কি রাতের আঁধারে অন্যায় অত্যাচারে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ধূলিসাৎ করে দেওয়া হবে? প্রশ্নটা সরকারের কাছে সাধারণ জনতার। আশা করব, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় এবং ওই বিষয়ে কঠোর নজরদারি করে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনবে। মানুষ এখন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে, এই স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করার দায়িত্বটাও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিতে হবে। সর্বোপরি জনমনে স্বস্তি ফিরাতে সরকারের উদ্যোগের বিকল্প নেই।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button