বিদ্যুৎ অপচয় রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে
কিছুদিন আগেই কোনো কোনো অঞ্চল প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। দেশের এই সংকটময় অবস্থায় যেখানে আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার কথা সেখানে দেখা যায় কেউ কেউ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ অপচয় করছেন। দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আবাসিক হলগুলোতে বিদ্যুৎ অপচয় করা হয়। অপ্রয়োজনে লাইট-ফ্যান চালু রেখে অনেক শিক্ষার্থী গুরুত্ব¡পূর্ণ জাতীয় সম্পদের অপচয় করছেন। এছাড়াও পানি ও গ্যাস ব্যবহারেও অসতর্কতা দেখা যায়। কেউ কেউ পানির কল ও চুলা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা সংলগ্ন রাস্তাগুলোতেও দিনের বেলায় লাইট জ¦ালিয়ে রাখতে দেখা যায়। দায়িত্বপ্রাপ্তদের অসতর্কতা ও অবহেলায় এধরনের অপচয় হয়ে থাকে। প্রয়োজন শেষে বৈদ্যুতিক সুইচ বন্ধ করুন। অপ্রয়োজনে লাইট অথবা ফ্যান চালিয়ে রাখবেন না। এতে বিদ্যুতের সাশ্রয় করা সম্ভব। বাসা-বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে নিয়মিত সুইচগুলো বন্ধ করে বের হন। দৈনন্দিন জীবনে আমরা ব্যাটারিচালিত স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, ইয়ারবাড ব্যবহার করি। চার্জ শেষে ডিভাইসটি খুললেও চার্জার প্লাগইন করাই থাকে। এতে বিদ্যুতের অপচয় হয়। তাই চার্জ করার পর চার্জারটি খুলে রাখতে হবে। এসির বাতাস খেতে ভালো লাগলেও এটি মোটেও শরীরের জন্য ভালো নয়। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই এসি থেকে বের হলেই শরীর হয়ে ওঠে অতিষ্ঠ। এসি যেমন পানির তৃষ্ণা কমিয়ে দেয় তেমনি বাড়িয়ে দেয় পরিবেশের তাপমাত্রা। আর অত্যধিক পরিমাণে এসির ব্যবহার বিদ্যুতের বিল বাড়ায় এবং বিদ্যুতের অপচয় করে। যার ফলে বাড়ছে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ। বিদ্যুতের ব্যবহার মূলত বেশি হয়ে থাকে শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সেখানেও রয়েছে বিদ্যুতের অপরিকল্পিত ব্যবহার, সঞ্চালন ব্যবস্থায় ত্রুটির ফলে বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ফ্যান, লাইট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সেলফোনসহ নানা ধরনের ডিভাইস, গেজেট, যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি যেগুলোর বৈদ্যুতিক চার্জ সম্পন্ন হওয়ার পরও বৈদ্যুতিক সংযোগে রেখে দিই, ফলে অনেক বিদ্যুৎ অপচয় হয়। আর বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সহজলভ্যতার কারণে শহরের সব সুবিধা পৌঁছে গেছে গ্রামে। মানুষ সহজেই সুইচ টিপলেই আলো পাচ্ছে, মাথার ওপর ফ্যান ঘুরছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র স্বস্তিময় ঠা-া পরিবেশ দিচ্ছে। তাই সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় বিদ্যুৎ ব্যবহারে সকলের সাশ্রয়ী হওয়া উচিত। পাশাপাশি বিভিন্ন আবাসিক হল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদ্যুৎ অপচয় রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জবাবদিহি নিশ্চিতে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা পালন করা করতে হবে।