দুর্নীতির সড়ক, সংস্কার প্রয়োজন!
বিগত সরকার শেখ হাসিনা প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। ক্ষমতায় থেকে দেশের যতটুকু উন্নয়ন করেছেন তার অধিকাংশ কাজেই অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এর মূল কারণ হলো ক্ষমতার অপব্যবহার। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে সাবেক ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ সকল জায়গায় ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলদারিত্ব ইত্যাদি অনিয়মের মহড়া ছিল আওয়ামী লীগের দখলে। শুধু যে আওয়ামী লীগের নেতারা দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন তেমনটা নয়, দীর্ঘ ক্ষমতার বলে সরকারি কর্মকর্তারাও হিং¯্র হয়ে উঠেছে। তাই দেশের প্রত্যেকটি জায়গায় দুর্নীতিতে ভরপুর ছিল। বিশেষ করে রাস্তাঘাট, ভবন নির্মাণ ইত্যাদিতে বাজেটের বেশির ভাগ লুটপাট করে নেওয়া হতো। যার ফলে উন্নয়ন মূলক কাজগুলো টিকসই হতো না। বিগত সরকারের প্রায় সকল কাজেই এমন দুর্নীতি থাকার কারণে বর্তমানে দেশের অধিকাংশ রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, ২০১৩ সালে খুলনার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে জয়বাংলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। কিন্তু নির্মাণকাজের কিছুদিনের মধ্যেই সড়কের পিচ ও খোয়া উঠে বড় গর্ত তৈরি হয়। এরপর টানা ১১ বছর ধরে সড়কটিতে চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। পত্রপত্রিকার খবরাখবর থেকে জানা যায়, টানা বৃষ্টিতে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়ূর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়কের ইটের সলিং উঠে কাদাপানিতে বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়েছে। খানাখন্দে হাঁটুপানি জমেছে। ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে এঁকেবেঁকে চলছে বাস-ট্রাক-ইজিবাইক। চলাচলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। কাদাপানিতে পথ চলতে নাভিশ্বাস পথচারীদের। কেডিএ সড়কটি নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাসস্ট্যান্ড-ময়ূর ব্রিজ পর্যন্ত কেসিসি ও বাকি অংশ এলজিইডিকে হস্তান্তর করে। কিন্তু ‘নিম্নমানের কাজ হয়েছে’ দাবি করে রক্ষণাবেক্ষণে আপত্তি জানান তৎকালীন সিটি মেয়র। সেই থেকে কেসিসি-কেডিএ সমন্বয়হীনতায় সংস্কারের অভাবে সড়কটি ওই অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটুপানি জমে যায়। যানবাহন দূরের কথা, হেঁটে চলাচলও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে।। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের প্রেক্ষিতে মানুষ এখন দেশের সংস্কার দাবি জানাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে। দেশ সংস্কার করতে হলে সকল পর্যায়ের মানুষের ভোগান্তি দূর করতে কাজ করতে হবে সরকারকে। যেমন চলাচলে জন্য সড়ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সংস্কার করে মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনাটাও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব। আমরা আশা করব, সড়কের বেহাল অবস্থাগুলো চিহ্নিত করে চলাচলের উপযুক্ত করবেন সরকার।