যানজট নিরসনে অটোরিকশা বন্ধে উদ্যোগ নিন
রাজধানীসহ সারাদেশের সড়ক-মহাসড়ক অলিগলিতে অবাধেই চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। অথচ ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এ ধরনের গাড়ি নির্মাণ আমদানি-বেচাকেনাও বন্ধের নির্দেশ রয়েছে হাইকোর্টের আদেশে। নগরীজুড়ে মাঝ রাস্তা দিয়েই চলছে ব্যাটারিচালিত এ রিকশা। কিছু কিছু সড়কে ট্র্যাফিক পুলিশ সদস্যদের এ বিষয়ে বিশেষ কোনো ভূমিকা বা পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ট্রাফিকের দায়িত্ব থাকা একাধিক সদস্যরা বলছেন, আইন মানতে চান না অটোরিকশার চালকরা। এদিকে এই কারণে রাজধানীর শাহবাগ, গুলিস্তান, মতিঝিল, টিকাটুলি ও গেন্ডারিয়াসহ অধিকাংশ এলাকায় দিনে কিংবা রাতে সড়কের যানজট কমছে না। আবার কোথাও কোথাও একবার যানজট লেগে গেলে তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কমছে না। এ অবস্থায় ঢাকার সড়কে চলাচলকারীদের রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হয়। বিদ্যুৎ ঘাটতির সময়ে অবৈধ এই যানবাহন চলতে দেওয়া কোনোভাবেই উচিত হচ্ছে না। এছাড়া বাহন নিরাপদও নয়। সাধারণ রিকশার অবকাঠামো কিছুটা পরিবর্তন করে তৈরি এসব রিকশা বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। এতে প্রায়ই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। বস্তুত এলোমেলো চলাচল, হুটহাট ঘোরানো, উল্টোপথে চলাচলের কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। জানা গেছে, প্রধান সড়কে অবৈধ যানবাহন বন্ধ এবং সড়ক আইন মানার বিষয়ে কঠোর হচ্ছে পুলিশ। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না এসব যানবাহন। রাজধানীতে টোকেনের বিনিময়ে চলে এসব অবৈধ যান। বস্তুত ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ না হওয়ার পেছনে সক্রিয় রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এসব রিকশার চালকরা বলছেন, তারা নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে টোকেন নিয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন। গবেষণার তথ্যমতে, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয়, এর প্রায় ২০ শতাংশই ঘটে ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে। অনুমোদিত যানবাহনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকে। কিন্তু অবৈধ যানবাহনের কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আলোচনার সুযোগ থাকে না। ঝুঁকিপূর্ণ এ যানবাহনটি যাতে রাজধানীতে চলাচল করতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষের কঠোর হওয়া উচিত। যে-সব ওয়ার্কশপে এসব অবৈধ যানবাহন তৈরি হচ্ছে, সেখানেও অব্যাহত অভিযান পরিচালনা করা দরকার। পাশাপাশি নগরীর চার্জিং পয়েন্টগুলোতে (গ্যারেজ) পুলিশ প্রশাসন, বিআরটিএ এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়ে যৌথ উদ্যোগে অব্যাহত অভিযান পরিচালনা করতে হবে।