রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে দরকার সরকারের কঠোর পদক্ষেপ
দেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টি উদ্বেগজনক। সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোর কথা বারবার বলা হলেও হাজার হাজার রোহিঙ্গা দেশে অনুপ্রবেশ করছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত থেকে রক্ষা পেতে নতুন করে ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের তথ্য পাওয়া যায়। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত দিয়ে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি এসে জড়ো হচ্ছে। সুযোগ বুঝে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢুকতে দুই দেশের দালালরা সহযোগিতা করছে। তারা সঙ্গে করে মাদক, স্বর্ণ ইত্যাদি নিয়ে আসছে যা আমাদের দেশের জন্য অশনি সংকেত। নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশ আশঙ্কাজনক। এমনিতেই আইনশৃঙ্খলা অবনতিসহ ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। তাদের প্রতিহত করা না গেলে কক্সবাজারবাসীকে খেসারত দিতে হবে। মাত্র দুই মাস হলো অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এমনিতেই ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি অমীমাংসিত। ১২ লাখ রোহিঙ্গার চাপ সামলাতে হিমশিম দেশ। এর মধ্যে নতুন করে আরও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এ সরকারের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করবে। তবে নতুন করে যেহেতু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টি আসছে, তাহলে প্রত্যাবাসন বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গাদের ভারে ন্যুব্জ। আগের রোহিঙ্গা এবং নতুন করে আসা রোহিঙ্গা উভয় মিলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গার যে সংখ্যা, এর সঙ্গে বিগত ৬ বছরে নতুন করে জন্ম নেওয়া প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ রোহিঙ্গা শিশু যোগ করলে সব মিলে বাংলাদেশে বর্তমানে রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ লক্ষাধিক। এখন রোহিঙ্গা সমস্যার মূল সমাধান হলো প্রত্যাবাসন। তাদের তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসন এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জরুরি। যদিও বিগত সরকারের সময়ে প্রত্যাবাসন নিয়ে চীনের মধ্যস্থতায় কমিটি হয়েছে এবং প্রাথমিক কিছু তালিকাও করা হয়েছে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে আছে। তাই প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বর্তমান সরকারের অবশ্যই আলোচনা শুরু করা উচিত। নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা যেন ঢুকতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নিতেই হবে। এবং বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে আরোও সতর্ক হতে হবে। যেহেতু রোহিঙ্গাদের কর্মকা- শুধু কক্সবাজারে সীমাবদ্ধ নেই, তারা পুরো দেশের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাচ্ছে। তাই নতুন রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধের পাশাপাশি সবাইকে প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানাচ্ছি।