সম্পাদকীয়

স্বাভাবিক পরিবেশ কাম্য

শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা

দেশে হঠাৎ করে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি পদত্যাগ করেন। তাঁরা এসব দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের মূল পদ শিক্ষকতায় ফিরে গেছেন। কিন্তু এর জের ধরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের প্রধানদেরও পদত্যাগে বাধ্য করানো হয়। এই পদত্যাগে বাধ্য করানোতে অংশ নেয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও। শিক্ষার্থীদের ঘন ঘন রাস্তায় নেমে আসার ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনের শৃঙ্খলা ব্যাহত হচ্ছে। অনেকের মতে, শিক্ষা প্রশাসন এখনো ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়নি। ফলে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থাপনায়ও তেমন পরিবর্তন আসেনি। আন্দোলনসহ নানা কারণে শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে এ ধরনের সংকট নতুন নয়। এ ধরনের সংকট বা সৃষ্ট অবস্থা যে শিক্ষার জন্য ক্ষতিকর, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এটিও মানতে হবে যে দলাদলি শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছে। শিক্ষকরা দলাদলি করেছেন, এমন অভিযোগও নতুন নয়। শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটি অরাজকতা। এতে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। তাদের পরস্পরের প্রতি আস্থা নেই। এতে শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের সম্মানবোধও থাকবে না। অটো প্রমোশন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস—এগুলো সমাধান নয়। অন্যদিকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্বের সুযোগে দৌরাত্ম্য বেড়েছে প্রাইভেট-কোচিংয়ের। অন্যদিকে বিনা মূল্যের ৩৫ কোটি বই এখনো ছাপার বাকি। জানা যায়, প্রাথমিকের বই ছাপা শুরু হলেও মাধ্যমিক ও মাদরাসার বইয়ের কাজ শুরু হয়নি। প্রতিবছর সাধারণত জুলাই-আগস্ট থেকে পাঠ্য বই ছাপার কাজ শুরু হয়। এর পরও ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বই দেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু এ বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এনসিটিবিতে অনেক পরিবর্তন আসে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, সদস্য ও অন্য কর্মকর্তারা বদলি হন। এরপর আবার নতুন শিক্ষাক্রম বদল করে আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাওয়া হয়। পাঠ্যক্রমেও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ বছর পাঠ্য বইয়ের কাজ দেরিতে শুরু হয়েছে। এরপর আবার পা-ুলিপি চূড়ান্ত করতে অনেক সময় চলে গেছে। ফলে যথাসময়ে বই ছাপা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং যথা সময়ে বই ছাপানো জরুরি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button