শিক্ষার্থীদের অর্থহীন সংঘাত বন্ধ হোক
ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মানুষ অতিষ্ঠ। স্কুল, কলেজের উঠতি বয়সের তরুণদের কাছে সংঘাত এক সাধারণ বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। পাশাপাশি প্রশাসনের গাফিলতি সংঘাতের অন্যতম কারণ। যে কোনো ধরনের সংঘাত কখনোই কাম্য নয়। সংঘাতের ফলে শিক্ষার্থীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় সঙ্গে জনগণের মনে আতঙ্ক, তীব্র যানজট ও চূড়ান্ত পর্যায়ে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি ঢাকার কলেজগুলোতে সংঘাতের কারণে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। কলেজগুলো হলো সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ, মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এবং সেন্ট গ্রেগরী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস ও নিয়মিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ায় আরও পাঁচটি কলেজের প্রথম ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের কয়েকটি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকার। সোহরাওয়ার্দী কলেজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ কোটি টাকার সম্পদ। সম্পদের ক্ষতি ছাড়াও এসব সংঘাতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হচ্ছে, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা করেছেন। এর আগে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘাত কিংবা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধের সময়ও মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে আমরা দেখিনি। যেকোনো কারণেই হোক সংঘাত-সংঘর্ষ কাম্য হতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করা না গেলে এমন সংঘাতের ঘটনা বাড়তেই থাকবে। শিক্ষার্থীদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কলেজ প্রশাসনকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জ্ঞানার্জন, দেশপ্রেমিক, সুবিবেচক হতে শেখায়। সেখান থেকে যেন হানাহানি, সংঘর্ষ, ধ্বংসের শিক্ষা না দেয়া হয়। ঠুনকো বিষয় নিয়ে যারা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সবসময় তৎপর ও কঠোর হতে হবে। আজকের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের কর্ণধার।