সম্পাদকীয়

পুনর্বাসনের সঙ্গে কর্মসংস্থানও জরুরি

বাড়ছে ভিক্ষুকের সংখ্যা

রাজধানীসহ সারা দেশেই বাড়ছে ভিক্ষুকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে বলে খবরে প্রকাশ। ভিক্ষাবৃত্তি নিরসন ও ভিক্ষুক পুনর্বাসনে একটি কর্মসূচি থাকলেও সেটি বাস্তবে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না এ ক্ষেত্রে। সাধারণভাবে বলা হয়, দেশে যখন অভাব-অনটন বেড়ে যায়, তখন ভিক্ষুকের সংখ্যাও বেড়ে যায়। দেশে যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দাম ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে, তার সঙ্গে নি¤œ আয়ের মানুষ খাপ খাওয়াতে পারছে না বলেই বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। এরই একটি দৃষ্টান্ত লক্ষ করা যায় কিছুটা কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করা টিসিবির ট্রাকগুলোর সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও কম মূল্যের পণ্য কিনতে না পেরে অনেককে মলিন মুখে ফিরে যেতে দেখা যায়। ২০১০ সালে ‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ নামে কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তবে সেই কর্মসূচি যে ব্যর্থ হয়েছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ভিক্ষুকের উপস্থিতি থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, শুধু রাজধানী নয়, দেশের সব শহরেরই চিত্র প্রায় একই রকম। সবখানেই বাড়ছে ভিক্ষুকের হাত। সমাজসেবা অধিদপ্তর জানায়, ভিক্ষুক পুনর্বাসনে মোবাইল কোর্ট কাজ করছে। পুনর্বাসনকেন্দ্রে নিয়ে তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে উপার্জনের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এর পরও প্রশিক্ষণ শেষ হলে অনেকে আবার পুরনো পেশায় ফিরে যায়। ফলে শহরগুলো ভিক্ষুকমুক্ত করা যাচ্ছে না। কীভাবে শহরগুলো ভিক্ষুকমুক্ত করা যায় সে বিষয়ে কার্যকর কোনো পরিকল্পনাও তাদের কাছে পাওয়া যায় না। অধিদপ্তরের একজন উপপরিচালক জানান, ভিক্ষুকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের পুনর্বাসনে প্রতিবছর কর্মসূচিতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেন, রাজধানীতে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আটক ভিক্ষুকদের রাখার জন্য পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্রের ফাঁকা জায়গায় অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৬টি টিনশেড ডরমিটরি ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। আমরা মনে করি, ভিক্ষাবৃত্তি নিবারণে আরো কার্যকর পরিকল্পনা নিয়ে যথাযথভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে নি¤œ আয়ের মানুষের পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান (টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ), আয় বৃদ্ধি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button