সম্পাদকীয়

মাদক চোরাচালান রোধে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মাদকের বড় কারবারিরা অনেকেই দেশ ছেড়ে বিদেশে অবস্থান নিয়ে দেশে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। করেছে মাদক পাচারের রুট পরিবর্তন। সীমান্ত এলাকায় বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার পাশাপাশি এখন ট্রেনেও তারা মাদক পাচার করছে, যা আগে সেভাবে ছিল না। মাদকদ্রব্যের মধ্যে ক্রিস্টাল মেথ ও আইসের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ হেরোইন ও কোকেন পাচার করছে তারা। মাদক কারবারিরা গত তিন মাসে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য পাচারের অন্যতম রুট কক্সবাজার ও মায়ানমারের সীমান্তঘেঁষা টেকনাফ। বর্তমানে এই পথসহ আরো কয়েকটি পথে আন্তর্জাতিক মাদকচক্র বাংলাদেশকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে। হেরোইন ও কোকেন দেশে এনে অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরি করছে তারা। নিরাপত্তা সংস্থা আনসার, পিমা, আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ এই তিন সংস্থার কর্মীরা থাকার পরও চলছে মাদকের কারবার। শীর্ষ পর্যায়ের শতাধিকসহ লক্ষাধিক মাদক কারবারির একটি খসড়া তালিকা করে সেই তালিকা অনুসরণ করে সারা দেশে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। তবে এদের বেশির ভাগ গ্রেপ্তার না হওয়ায় এখনো অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা, হেরোইনসহ অন্যান্য মাদক। জানা গেছে, সর্বশেষ ৩ নভেম্বর সীমান্তবর্তী বেনাপোলে ট্রেনে তল্লাশি চালিয়ে একটি ব্যাগ থেকে ২ দশমিক ৭৬০ কেজি কোকেন ও ১ কেজি ৬৯২ গ্রাম হেরোইন জব্দ করে বিজিবি। এ ছাড়া সম্প্রতি আরও কয়েকটি মাদকের চালান আটকের ঘটনা ঘটেছে। এর বেশির ভাগই এসেছে অভিনব কৌশলে। ট্রেনের পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কার, পণ্যের ভিতর এমনকি পেটের ভিতরে করেও ইয়াবা পাচারের ঝুঁকি নিচ্ছেন কারবারিরা। অল্প বিনিয়োগে বিপুল আর্থিক লাভের আশায় জীবন বাজি রেখে এ ধরনের কাজ করছেন তারা। ইয়াবার পাশাপাশি ক্রিস্টাল মেথ, আইস, হেরোইন ও কোকেনের মতো ভয়ংকর মাদকও নিয়মিত আসছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশকে ব্যবহার করে তা চলে যাচ্ছে পাশের একটি দেশে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যত চালান ধরা পড়েছে তার বেশির ভাগই এসেছে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে। তবে এই কোকেন দেশের ভেতরেও বেচাকেনার জন্য সরবরাহ করা হয়। যদিও আমাদের দেশে মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স থাকলেও দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। ফলে এই জায়গায় সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ও কিছু বেসরকারি সংস্থার আরো গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মাদক কারবারিদের তালিকা করে অভিযান অব্যাহত রাখা জরুরি ও দেশের যে-সব সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক বেশি ঢ়ুকছে, সেসব এলাকায় আগের চেয়ে নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।’

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button