সম্পাদকীয়

গ্লুকোমা: নীরব ঘাতকের বিরুদ্ধে সচেতনতা জরুরি

গ্লুকোমা চোখের এমন এক নীরব ঘাতক, যা আক্রান্ত ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি চিরতরে কেড়ে নিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই রোগে ভুগছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ৪০ বছর বয়সের পর থেকে গ্লুকোমার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, যা অধিকাংশ মানুষের অজানা। এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ^ গ্লুকোমা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটি ও অ্যারিস্টোভিশন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের চোখেরও রক্তচাপের মতো একটি নির্দিষ্ট চাপ থাকে, যা ১০ থেকে ২১ মিলিমিটার অব মার্কারি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু যখন এই চাপ ২১ মিলিমিটারের ওপরে চলে যায়, তখন চোখের ভেতরের অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে, ফলে দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে পারে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ গ্লুকোমা সাধারণত কোনো লক্ষণ ছাড়াই ধীরে ধীরে অন্ধত্বের দিকে নিয়ে যায়। এমতাবস্থায়, গ্লুকোমা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। সময়মতো রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা গ্রহণ করলে দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, ৪০ বছরের পর নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষার মাধ্যমে চোখের চাপ পর্যবেক্ষণ করা উচিত। সম্প্রতি রাজধানীর সোবহানবাগে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা গ্লুকোমা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। পাশাপাশি, ধানমন্ডির হারুন আই ফাউন্ডেশন হাসপাতালে বিনামূল্যে স্ক্রিনিং ক্যাম্প ও বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্লুকোমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সহায়ক হবে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত গ্লুকোমা প্রতিরোধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধা সহজলভ্য করা প্রয়োজন। সর্বোপরি, গ্লুকোমা থেকে বাঁচতে জনগণকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা গ্রহণই পারে দৃষ্টিশক্তি রক্ষার মূল চাবিকাঠি হতে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button