রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময়, মুক্ত ৩৯০ জন

প্রবাহ ডেস্ক : রাশিয়া ও ইউক্রেন গত শুক্রবার একসঙ্গে ৩৯০ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং আগামী কয়েক দিনের ভেতরে আরও বন্দি মুক্তি দেওয়া হবে জানিয়েছে। এটি চলমান যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময়ের শুরু বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুই দেশই জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ২৭০ জন সেনা ও ১২০ জন সাধারণ নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে। গতকাল শনিবার ও রবিবার আরও বন্দি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। এই বন্দি বিনিময় ২০২২ সালে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর প্রথম সরাসরি আলোচনার ফলাফল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মুক্তিপ্রাপ্ত ইউক্রেনীয় সেনা ওলেক্সান্ডার নেহির বলেন, ‘আমি আমার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারছি না। আমি ২২ মাস বন্দি ছিলাম।’আরেক সেনা, ওলেক্সান্ডার তারাসোভ বলেন, তিনি খেরসন ফ্রন্টে বন্দি হয়েছিলেন ইউক্রেনীয় বাহিনী অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করার সময়।‘আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না এটা সত্যি,’ বলেন তিনি। অন্যদিকে, রাশিয়ায় মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিরা প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে পৌঁছেছে। সেখানেই তাদেরকে চিকিৎসা ও মানসিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু রুশ নাগরিকও আছেন, যাদেরকে ইউক্রেনীয় হামলার সময় কুরস্ক অঞ্চলে আটক করা হয়েছিল। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু মুক্তিপ্রাপ্ত মানুষ বাসে বসে হাসছেন বা কাঁদছেন। আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, সেনা পোশাকে মুক্তিপ্রাপ্ত রুশরা রাশিয়ার এবং সোভিয়েত পতাকা উড়িয়ে ‘হুররাহ’ ধ্বনি দিচ্ছেন।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
এই বন্দি বিনিময় নিয়ে শুক্রবার ট্রুথ সোশালে এক পোস্টে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘দুই পক্ষকেই অভিনন্দন। এটা হয়তো বড় কিছুর শুরু হতে পারে’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের বহু সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন, যদিও কোনো পক্ষই সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করে না। এছাড়াও, হাজার হাজার ইউক্রেনীয় বেসামরিক মানুষ রুশ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। ইউক্রেন গত শুক্রবার জানিয়েছে, তারা অবিলম্বে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত। তবে রাশিয়া বলেছে, তারা আগে কিছু শর্ত পূরণের দাবি জানাচ্ছে, তার আগে হামলা বন্ধ করবে না। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য এই শর্তগুলোকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ট্রাম্প, যিনি ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন কিছুটা কমিয়ে রাশিয়ার দিকের অবস্থানকে আংশিক স্বীকৃতি দিয়েছেন, বলেছিলেন যে রাশিয়া যদি শান্তির পথে বাধা দেয় তবে তিনি আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন। কিন্তু সোমবার পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর আপাতত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাসটেম উমেরভ বলেন, ‘এই বন্দি বিনিময় শান্তির পথে প্রথম ধাপ। আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের যুদ্ধবিরতির পথে সহায়তা করবে।’ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, বন্দি বিনিময় শেষ হলে মস্কো একটি দীর্ঘমেয়াদি শান্তিচুক্তির খসড়া ইউক্রেনের কাছে তুলে দেবে। তথ্যসূত্র: আল জাজিরা