স্থানীয় সংবাদ

মাগুরা থেকে আনসার আল ইসলামের দুই সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ঃ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলামের দুই সক্রিয় সদস্যকে মাগুরা সদর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬। গত বুধবার রাত অনুমান সাড়ে ১০টায় পরিচালিত অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পাবনা সদরের রাঘবপুর গ্রামের মোঃ মনিরুল হায়দারের মৃদুলের ছেলে এবং বরিশালের হিজলা থানাধীন মানরাতুল কুশুরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুস বারীর ছেলে মোঃ আব্দুল করিম (২৭)
র‌্যাব ৬ সূত্র জানায়, বুধবার রাত অনুমান সাড়ে ১০টায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, মাগুরা জেলার সদর থানার আলমখালী যাত্রী ছাউনি এলাকায় জঙ্গি সংগঠনের সদস্য একত্রে মিলিত হয়ে গোপন বৈঠক করছে। এরই প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর দুই আসামী মোঃ ঈষান হায়দার (২৮) ও মোঃ আব্দুল করিম (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জন সদস্য পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্য। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে উক্ত সংগঠনে যোগদান করে। পরবর্তীতে তারা নিজেরাই সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। এ উদ্দেশ্যে সংগঠনের সদস্যদেরকে তারা বিভিন্ন উগ্রবাদি পুস্তিকা, মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতো। অন্যদিকে তারা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে তাদের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের নিকট থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতো। এর পাশাপাশি তারা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করে বিভিন্ন তথ্যের অপব্যাখা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তুলতো।
গ্রেফতারকৃত ঈষান হায়দার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রোডাকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিল। সে পূর্বে ধৃত ইয়াকুব হুজুরের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী কার্যক্রম করতে থাকে। মূলত সে পাবনা জেলার দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করে আসছিলো। পাশাপাশি সে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে সংগঠনের সদস্যদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে পার্শ্ববর্তী দেশে প্রেরণের কাজে নিয়োজিত ছিল। গ্রেফতারকৃত আব্দুল করিম পেশায় মুদি দোকানদার ছিল। সে ধৃত ঈষান হায়দার এবং আব্দুল্লাহ এর মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী কার্যক্রম করতে থাকে। সে তার নিজ এলাকা বরিশালে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সংগঠনের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতো বলে জানা যায়্। টগেট কিলিং এর ব্যপারে সে অত্যন্ত উৎসাহী ছিল বলে আমাদের জানায়। এর পাশাপাশি সে সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা প্রদান এবং সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের নিকট হতে চাঁদা সংগ্রহ করতো বলে জানা যায়। এছাড়াও সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠনের প্রচার-প্রচারোনা করে সাধারণ মানুষদের উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃতদের সাথে প্রাথমিকভাবে কথা বলে জানা যায়, উভয়ের নামেই পূর্বে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। একারনে তারা বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button