নগরীর উদয়ন প্রাইমারী স্কুলের আলোচিত সেই প্রধান শিক্ষক মনিরুলকে অন্যত্র বদলী : দু’টি অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত
দৈনিক প্রবাহ সংবাদ প্রকাশের জের
স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনার তালতলা উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই আলোচিত প্রধান শিক্ষককে অবশেষে বদলি করার আদেশ দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর। তার নানা অভিযোগের তদন্তে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাকে বদলির আদেশ দিয়েছেন। গত ৭ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষার খুলনা বিভাগীয় উপ পরিচালক মোঃ মোসলেম উদ্দিন এ অফিস আদেশ জারি করেন। আলোচিত ওই শিক্ষকের নাম মোঃ মনিরুল ইসলাম। তাকে মহানগরীর উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা পল্লীতীর্থ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করার আদেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক কারণে জারীকৃত বদলীর আদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে কার্যকর করা হবে। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ নিয়ে দৈনিক প্রবাহ পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয়। যা তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সত্যতা পান। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, খুলনা মহানরের তালতলা উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুল ইসলাম কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত ও অশ্লীল ছবি ভিডিও ছড়ানোসহ পাঁচটি অভিযোগে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি পেশ করা হয়। বীরেন্দ্রনাথ ঘোষের নেতৃত্বে একদল নাগরিক নেতা গত ৩ আগস্ট জেলা প্রশাসকের নিকট এই স্মারক লিপি পেশ করে। এরই প্রেক্ষিতে ডিসি অফিস থেকে অভিযোগ তদন্তের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের ডিডিকে নির্দেশনা দেন। সে মতে ডিডি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি গত ২২ অক্টোবর শিক্ষককে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই প্রধান শিক্ষককে প্রশাসনিক বদলীর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের বিভাগীয় উপ-পরিচালক (ডিডি) বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করেন। এর আগে ডিডি গত ১৬ আগস্ট মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর ওই শিক্ষকে প্রশাসনিক বদলীর জন্য অনুমতির জন্য পত্র প্রেরণ করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ৪ ডিসেম্বর ডিডিকে আলোচিত শিক্ষককে বদলীর অনুমতি দেয়া হয়। সে মতে, গত ৭ ডিসেম্বর তাকে মহেশ্বরপাশা পল্লীতীর্থ স্কুলে বদলীর আদেশ দেয়া হয়। ইতিপূর্বে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে কর্তৃপক্ষ লঘুদন্ড হিসেবে তার বার্ষিক বেতনবৃদ্ধি এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। একই সাথে ওই শিক্ষক উক্ত সময়ের বকেয়া প্রাপ্য হবেন না মর্মে আদেশ প্রদান করেন প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ মোসলেম উদ্দিন। এ আদেশ জারি করার পর অভিযোগকারীরা আবারো আন্দোলন শুরু করে। পরে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে অন্যত্র বদলীর আদেশ দিয়েছেন। এদিকে গত ১৪ ডিসেম্বর অভিযুক্ত শিক্ষক তার বদলীর আদেশ পূর্ণবিবেচনার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ মোসলেম উদ্দিনের নিকট আবেদন করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারী নেতা বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি মাপ করে দেন তাহলে তারা আবারো আন্দোলনে নামবেন।