স্থানীয় সংবাদ

নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সুযোগে কাজে লাগিয়ে দেদারসে চলছে অতিথি পাখি শিকার

শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ সারাদেশে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রয়েছে মানুষের ব্যস্ততা। আর এই ব্যস্ততা সময়কে কাজিয়ে লাগিয়ে এক শ্রেণীর মানুষেরা রাত্রের আধারে বিশেষ ভাবে তৈরিফাঁদ পেতে চালিয়ে যাচ্ছে পাখি শিকার। এভাবে চলছে খুলনায় বিভিন্ন এলাকায় খালে-বিলে অতিথি পাখি শিকার। এসব অতিথি পাখি আমাদের দেশে শীত মৌসুমে খাবার আর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে আসে ঠান্ডা রোদ আবহাওয়ার দেশ বাংলাদেশে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাখি শিকারে ব্যাস্ত থাকে কতিপয় শিকারি। এবিষয়ে কথা হয় তেরখাদা এলাকা মোকামপুর এলাকার বাসিন্দা আলতাফ হোসেনের সাথে তিনি বলেন, রাত্রে আধারে আর ঠান্ড শীতের মধ্যে শিকারি ফাঁকা বিলে পাখির শিকার করলেও দেখার কেউ নেই। এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে এত সময় প্রশাসনের নেই। এছাড়া কার কাছে বিক্রি করবে আগের থেকে ঠিক করা থাকে সকালের আগে পৌঁছে যাবে পাখি। আপনার কি ধরনের পাখি প্রয়োজন ওরা দিবে। মুলতঃ সূদুর সাইবেরিয়া হিমালয়, শীতাঞ্চলের দেশগুলো থেকে এই পাখি গুলো আমাদের দেশে শীতের সময়ে খালে-বিলে বসবাস করে। আর এই খাল-বিল থেকে রাত্রের আধারে শিকারীরা বিশেষভাবে তৈরি এক প্রকার সূতা দিয়ে জাল বানিয়ে ফাঁদ পেতে বা ইয়ারগান দিয়ে চলে পাখি শিকার। এসব অতিথি পাখির মধ্যে আমাদের দেশে যেসব অতিথি পাখি সাধারণত সচরাচর চোখে পড়ে এর মধ্যে উল্লেখ্য যেমন পানকৌড়ি, হাসঁ, কাদা খোচা, হুরহুর, খয়রা, বালি হাসঁ, গাংচিল, ডাহুক, নলডাক, ভাড়ই, জলপিপি পাতাড়িসহ অনেক প্রজাপতির পাখি থাকে। এসব পাখিদের আগমনে কিচির মিচির শব্দে বিল ঝিল গুলো মুখরিত হয়ে আনন্দঘন পরিবেশ হয়ে ওঠে । সেই সাথে পাখি ধরতে ও প্রস্তুত হয়ে যায় এক শ্রেণীর শিকারীরা এমনকি শীত মৌসুমে পাখি শিকার করে চলে তাদের জীবিকা। এসব অতিথি পাখিগুলো সাধারনত খুলনা জেলা তেরখাদা, ডুমুরিয়া, সাহাপুর, রংপুর, বিল ডাকাতিয়া, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, কয়রা ও উপকুলীয় অঞ্চলে বিলে-খালে থাকে। খুলনা সাহাপুর এলাকার বাসিন্দা মানুষ হালদার বলেন, শীতের আগমনে এসব বিলে পাখি গুলো ঝাঁকে ঝাঁকে চলে আসে। আমাদের এলাকায় বেশ কয়েকজন পাখি ব্যবসায়ি রয়েছে। যারা খুবই গোপনে এসব পাখি শিকার করছে। রাত্রের বেলায় ফাদঁ পেতে ভোরে আলো ফোটার আগে বিক্রি করছে। তাছাড়া এসব পাখি গুলো ক্রয় করার জন্য আগে থেকে তাদের ক্রেতা প্রস্তুত থাকে। শিকারীরা ভোরে যেয়ে তাদের বাড়ীতে পাখি পৌঁছে দিচ্ছে। তবে এসব শিকারীদের হাতেনাতে আটক করা প্রায় অসম্ভব কারন খুব আস্থাভাজন বন্ধুবর না হলে শিকার সহজে ধরা দিবেনা। এবিষয়ে মিজানুর রহমান বলেন, শীত মৌসুম আসার আগে অনেক ক্রেতা রয়েছে যারা অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছে। সুতা দিয়ে জাল তৈরি করার জন্য অর্থের যোগান ও দেয়। তবে আগের মত এখন আর দিনের আলোয় পাখি ধরা যাচ্ছেনা। আশে পাশে অনেক শত্রু রয়েছে তারা প্রশাসনকে বলে দিতে পারে। বিশেষ কায়দায় সূতার জাল দিয়ে এসব পাখি গুলো শিকার করা হয়। এবিষয়ে খুলনা বণ্যপ্রাণী সংরক্ষন ও বিভাগীয় বনকর্মকর্তা নির্মল কুমার সাহা বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যস্ততায় থাকার কারণে আবারো শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এর আগে বেশ কয়েকবার তেরখাদা থেকে ফাঁদ উদ্ধার করেছি। পাশাপাশি মাইকে প্রচার করা হয়েছে। নির্বাচন শেষ হলে আবারো কঠোর অবস্থানে থেকে পাখি শিকার রোধ করব।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button