খুলনায় তীব্র শীতে হাঁসি ফুটেছে গরম কাপড় ব্যবসায়িদের মুখে

বিকিকিনি বেড়েছে ব্যপকহারে, হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা
মুহাম্মদ নূরুজ্জামান ঃ হাঁড় কাপানো শীতের প্রভাব পড়েছে খুলনার গরম কাপড় ব্যবসায়। হাসি ফুটেছে ব্যবসায়িদের মুখে। বিশেষ করে নগরীর ফুটপাতগুলোতে গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসা ব্যবসায়ীরা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। গরম কাপড়ের সঙ্গে অর্থেরও গরম বোধ করছেন তারা। তাদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। শীতের তীব্রতা অব্যাহত থাকলে ব্যবসা আরো ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা। প্রচন্ড শীতের কারণে উষ্ণতার জন্য গরম কাপড়ের কদর বেড়েছে। ভিড় দেখা গেছে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোয়। স্বল্প মূল্যের কারণে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। মধ্যবিত্ত নি¤œ মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষেরাই বেশি ভিড় করছেন এসব দোকানে। তবে ধনীরাও ঘুরছেন ফুটপাতের দোকানে। শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড়, হাত-পা মোজা, টুপি, মাফলার, জ্যাকেট কিনতে অনেকেই সেখানে ছুটছেন ।
নগরের আহসান আহমদ রোডস্থ ফুটপাতের গরম কাপড় বিক্রেতা মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জানান, শীতে বেচা বিক্রি বেড়েছে। তার দোকানে মাফলার এবং টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে।
খুলনা জেলা স্টেডিয়াম সংলগ্ন ফুটপাতের বিক্রেতা মোঃ সজিব বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের তীব্র শীতের কারণে ভালো ব্যবসা হচ্ছে। গরম কাপড় বিক্রেতাদের মুখে হাসি ফুটেছে। লাভ হচ্ছে বেশ। সার্কিট হাউস মাঠে খোলা আকাশের নিচে গরম কাপড় সাজিয়েছেন বিক্রেতা মোঃ আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, অতি স্বল্প মূল্যে তিনি শীতের গরম কাপড় বিক্রি করছেন। এরমধ্য ২০ টাকা থেকে ৫০ ও ১০০ টাকা মূল্যে মানসম্মত সোয়েটার পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। ব্যবসা ভালো হচ্ছে। তবে দোকানে একটু দামি পুরনো কাপড় বিক্রি হচ্ছে কম। এভাবে শীত অব্যাহত থাকলে বেচা বিক্রি বাড়বে বলেও আশা করছেন তিনি। নগরীর রেলওয়ে মার্কেটের ক্রেতা মনিরুল ইসলাম জানান, এখন মনে হচ্ছে শীতকাল এসেছে। ভেবে ছিলাম এ বছর শীতের দেখা মিলবে না। এখন অবস্থা! তাই জ্যকেট কিনতে চলে এসেছি। কিন্তু শীত দেখে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে। আগে যেসব পোশাক ৫০০/৬০০ টাকা কেনা যেত। সেটি এখন ৭০০-৯০০ টাকা হাকাচ্ছেন।
ক্রেতা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, তীব্র শীতের কারণে মাফলারও শীত নিবারণ হচ্ছে না। ফুটপাত থেকে স্বল্পমূল্যে একটি গলাসহ টুপি কিনলাম।
অপর ক্রেতা ফাহাদ ইসলাম বলেন, তীব্র শীত পড়েছে। অভিজাত দোকানগুলোতে গরম কাপড়ের মূল্য অধিক। দেড় থেকে দুই হাজার টাকার নিচে ভালো সোয়েটার পাওয়া যায় না। তাই মাত্র ৫০- ১০০ টাকার বিনিময়ে ফুটপাত থেকেই গরম কাপড় ক্রয় করছি।
দোকানো আসা সোহেল রানা বলেন, এখন ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো। দাম হাকিয়ে বসে থাকছেন। তারপরও পছন্দ মতো একটি সোয়েটার কিনতে পেরেছি।
তবে শীতে কষ্টে পড়েছেন নিম্ব আয়ের মানুষেরা। রিক্সা চালক আসলাম শেখ বলেন, শীতে অবস্থা কাহিল। কিন্তু পেটতো বাঁচাতে হবে। তাই রিক্সা নিয়ে বের হয়েছি। শীতে লোকজনও কম। আবার আয় না হলে সংসার চালতে পারবো না। আমাদেরই সমস্যা বেশী। অবশ্য তীব্র শীতে পিঠে-পুলির দোকানে বেচাবিক্রি জমজমাট। নগরীর তারেরপুকুর, মোল্লাবাড়ি মোড়, দোলখোলা, বৈকালী, খালিশপুরের মৌসুমী পিঠার দোকানে ভিড় লক্ষণীয়।
পরিবার নিয়ে পিঠা খেতে আসা মোরশেদ আলম বলেন, শীতে পিঠে খাওয়ার মজাই আলাদা। বাড়িতে পিঠা তৈরীতেও ঝামেলা । তাই ছেলে ও বউকে নিয়ে চলে এলাম তারেরপুকুর। কিন্তু যে ভিড়। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সরকারি আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, সারদেশের ন্যায় খুলনা অঞ্চলেও তাপমাত্রা কমছে। ১৫ জানুয়ারির পর তাপমাত্রা একটু বাড়বে। তবে ২০ জানুয়ারি পর আবার তাপমাত্রা কমতে পারে বলেও জানান তিনি।