স্থানীয় সংবাদ

নগরীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত রানা’র স্ত্রী আতঙ্কে ভুগছেন

রানা আগে থেকে প্রাণনাশের হুমকিতে ছিলো : নিহতের স্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সাদিকুর রহমান রানা ওরফে বিহারী রানা’র স্ত্রী হাবিবা রানু তার স্বামীর মতো সেও আতঙ্কে ভুগছেন। নিহত রানার স্ত্রীর দাবি তার স্বামী মৃত্যুর আগ থেকেই প্রাণনাশের হুমকিতে আছে এমন আশংকার কথাও বলেছেন। যেকোন সময়ই তাকে হত্যা করতে পারে বা জীবনে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে এমন কয়েকজনের নামও স্ত্রীর কাছে বলেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৩ মিনিটে হত্যার মামলার বাদী হাবিবা রানু প্রতিবেদকের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার নিহতের রানার স্ত্রী ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ৪-৫ জনকে আসামি করে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হচ্ছেন লাভলু পাটোয়ারী (৪০), বুলু পাটোয়ারী (৩৫), সাব্বির (২৮), সৌরভ (৩০), সোহেল (৪০), মোঃ ফয়সাল হোসেন (২৯), হেলাল (৩২), সোহাগ সাহা (৩৪), সৌরভ সাহা (২৬) এবং রাজু ওরফে ব্লাক রাজু (৩৮) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন আসামী। মামলার বাদী ও নিহত রানা’র স্ত্রী হাবিবা রানু এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামী হত্যাকা-ের সাথে জড়িত থাকার কাউকে সন্দেহ করি কি না এবং তাদের নামগুলো পুলিশ জানতে চেয়েছিলো। আমি পুলিশকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলাম। পুলিশ সেগুলো কাগজে লিখে নেয়। নামগুলো হচ্ছে লাভলু পাটোয়ারি, বুলু পাটোয়ারি, ফারুক ও মনা ওরফে জুয়াড়ি মনা। এদের মধ্যে মনা’সহ দুইজনের নাম হত্যা মামলার এজাহারে উল্লেখ না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন ( ফর্সা মতো) পুলিশ আমাকে বলেন, এদের নাম দিলে হত্যা মামলাটি হালকা হয়ে যাবে এমন কথা বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে বুঝিয়েছেন। তখন আমি চুপ হয়ে যাই। তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে থেকেই এরাই আমার স্বামীকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করছিলেন এমন আশংকার কথা তার স্বামী তাকে প্রায়ই শেয়ার করতেন। বাদী রানু বলেন, তার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় ফুলমার্কেটে মনা তার স্বামীকে মিথ্য মামলা ও পুলিশকে দিয়ে হয়রানি করেছিলো। এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি-ধামকি দিতো। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই। এখন তারাও আমাকে আমার স্বামীর মতো মেরে ফেলতে এমন আশংকা কথা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ওয়াহিদুজ্জামান বলেন সকাল সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদককে বলেন, রানা’র হত্যাকা-ে সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা অব্যাহত আছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারবো।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাত ৭টার দিকে রানা ও পলাশ নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে আহসান উল্লাহ কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় ২-৩ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুলিতে ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ রানাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত যুবকের পেটে বাম সাইডে ও গলার নিচে এবং বাম কানের নিচে মোট ৩টি গুলি লেগেছে। নিহত রানা দেবেন বাবু রোডের শেখ মো: ইসলামের ছেলে। এদিকে এ ঘটনায় নগরীর শের ই বাংলা রোডের মহারাজের ছেলে আহত পলাশকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত রানার বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, মারামারি, প্রতারণাসহ ১০টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, নিহত রানা এক সময়ে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু’র অনুসারি ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button