দৌলতপুরে আহলে হাদিসের ইমামের একক আধিপত্যের জেরে মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টারঃ নগরীর দৌলতপুর পাবলা দারুস সুন্নাহ আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওঃ মুনিরউদ্দীনের একক আধিপত্যর জেরে মসজিদ কমিটির সভাপতি, সাঃ সম্পাদক, সদস্য সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে খুলনা আদালতে মামলা করেছেন মনিরউদ্দীনের ছেলে সাঈদ বিন মুনির। মসজিদ কমিটি, প্রতক্ষ্যদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওঃ মুনিরউদ্দীনের বিরুদ্ধে এলাকার মুসল্লিদের বহু লিখিত অভিযোগ মসজিদ কমিটির নিকট জমা দেন এলাকাবাসী। উল্লেখিত, দৌলতপুর দারুস সুন্নাহ আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওঃ মুনিরউদ্দীনের একক আধিপত্য ও স্বেচ্চাচারিতা, নিজের খেয়াল খুশিমত চলা, মসজিদ কমিটির কথা অমান্য করা, মসজিদে দীর্ঘ দিন ধরে অনুপস্থিত থাকা, ঠিকমত মসজিদের দায়িত্ব পালন না করা, ও সময়মত মসজিদে উপস্থিত হয়ে মুসল্লিদের নামাজ না পড়ানো, সার্বক্ষনিক উগ্রপন্থি বক্তৃতা করা, সারা বাংলাদেশে ২% মুসলমান বাকি সবাই কে কাফের বলা খুদবাকালনি বয়ান করা, মসজিদের কমিটি সহ মুস্ললিদের মামলার ভয় ভীতি দেখানো, মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিদের সাথে বাজে ব্যবহার করা, নিজের দল তৈরী করে বিভিন্ন অজুহাতে সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা নিয়ে মাওঃ মুনিরউদ্দীনের সাথে মসজিদ কমিটি সহ নানা বিষয়ে অভিযোগ আসে। ইমামের এই সকল কর্মকান্ডের অভিযোগের জন্য মসজিদ কমিটি কর্তৃক রেজুলেশন করে গত ২ ফেব্রয়ারী-২৪ ইমাম মাওঃ মুনিরউদ্দীনকে চাকরী থেকে অব্যাহিত দেওয়া হয়। গত ৫ ফেব্রয়ারী খুলনার স্থানীয় দৈনিক প্রবাহ পত্রিকা সহ কয়েকটি স্থানীয় দৈনিক কাগজে মসজিদের ইমাম মাওঃ মুনিরউদ্দীন কে মসজিদের সকল দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয় ও মসজিদের বিষয়ে আর্থিক লেনলেন না করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। তাছাড়া সাময়িকভাবে মসজিদের মুয়াজ্জিন কে নামাজ পড়ানো সহ মসজিদের সার্বিক বিষয় দেখা শুনার দায়িত্ব দিলে মাওঃ মুনিরউদ্দীন ও তার দীর্ঘ দিন থেকে পোষা কিছু অনুসারীদের মধ্য ক্ষিপ্ততা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ৯ ফেরুয়ারী শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে মসজিদের সেক্রেটারি মুসল্লিদের উদ্দ্যেশে কিছু কথা বলার জন্য মুসল্লিদের বসতে বললে মসজিদের ইমাম মাওঃ মুনিরউদ্দীনের ছোট ছেলে ও তার সঙ্গীরা তখন মসজিদের মধ্য চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দেয় এবং মসজিদ কমিটির সদস্যদের মারধোর শুরু করে। এ সময় সাধারণ মুসল্লিরা ঠেকাতে গেলে তাদের গায়ে ও হাত তোলে। তখন মসজিদে উপস্থিত থাকা দৌলতপুর থানা পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যরা মুসল্লিদের ছত্র ভঙ্গ করে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ইমামের ছেলেসহ তার ৩ জন সঙ্গীকে কে আটক করে থানা নিয়ে যান। ঐ দিন রাতে আটককৃত ৩ জন থানায় মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে বেরিয়ে আসেন এবং গত ১৩ ই ফেরুয়ারী মসজিদ কমিটির সভাপতি, সাঃ সম্পাদক সদস্য সহ ১৮ জনের নামে মাওঃ মনিরউদ্দীনের ছেলে সাঈদ বিন মুনির বাদী হয়ে খুলনা আদালতে মামলা করেন। মসজিদ কমিটির সদস্য বৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ খুলনা ৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন কে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি কোন প্রকার বিরোধ সৃষ্টি না করে শান্তি শৃংখলা বজায় রেখে স্থানীয় ৬নং কাউন্সিল শেখ শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স কে দ্রুত সময়ের মধ্য উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে নিরপেক্ষ ভাবে সমাধান করে দেওয়ার জন্য দিকনির্দেশনা দেন। গতকাল শুক্রবার ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স ও মোঃ কাইজার আহম্মেদ সহ দৌলতপুর দারুস সুন্নাহ আহলে হাদিস জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় শেষে মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিদের নিয়ে বসেন এবং তাদের অভিযোগ গুলো শুনেন ও খুব দ্রুত সময়ের মধ্য মসজিদের সাবেক ইমাম মাওঃ মুনিরউদ্দীন, মসজিদ কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলার বাদী মাওঃ মুনিরউদ্দীনের ছেলে সাঈদ বিন মুনিরকে ডেকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তখন দৌলতপুর থানা পুলিশের একটি দল ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগন সেখানে উপস্থিত ছিলেন । দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, দৌলতপুর দারুস সুন্নাহ আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমামের সাথে মসজিদ কমিটির সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। গত ৯ ফেরুয়ারী শুক্রবার মসজিদের ইমামের ছেলে সাঈদ বিন মুনির ও তার সঙ্গীদের সাথে মসজিদ কমিটির মধ্য হাতাহাতি হয়। তখন ঘটনাস্থল থেকে সাঈদ বিন মুনির ও তার ২ সঙ্গীসহ দৌলতপুর থানা পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় এবং ঐ দিন রাতে তাদের কে মুচলেকা নিয়ে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি মিট মীমাংসার প্রক্রিয়া চলছে।