খুমেক হাসপাতালে প্রসুতি বিভাগে লেবার ইউনিট-৪ এর রোগীরা ৪ দিন ধরে তিন প্রকার ওষুধ পাচ্ছে না

গরীব ও অসহায় রোগীরা চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে দিশেহারা
কামরুল হোসেন মনি ঃ গর্ভবতী সুমাইয়া (২৮) গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খুমেক হাসপাতাল প্রসুতি বিভাগ লেবার ইউনিট-৪ এর ভর্তি হয়। কিন্তু ভর্তির পর থেকেই ইনজেকশন নেলিপসিন হাসপাতাল থেকে পায়নি। রোগীর আত্মীয় নিলু জানান, এ পর্যন্ত ৪ হাজার টাকা ওষুধ কিনতে হয়েছে। আমরা গরীব অসহায় মানুষ হাসপাতালে আভ্যন্তরিন বিষয়ে নিয়ে কি ঘটনা ঘটছে, ওটা আমরা জানতে চাই না। আমার রোগী যাতে সরকারি ওষুধ পায় সেটাই আমাদের চাওয়া। তার মতে অন্য আরও এক রোগীর আত্মীয় জানান, ইনজেকশন সেফট্রিয়াক্সো টু-গ্রাম হাসপাতাল থেকে না পেয়ে বাইরে ফার্মেসী থেকে ৩৫০-৪০০ টাকায় কিনে আনতে হচ্ছে। দুইবার প্রয়োজন হয় এই ইনজেকশনের জন্য। আমরা রোগীর চিকিৎসা ব্যয় মিটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। হাসপাতালে কি হলো না, হলো আমরা বাপু বুঝতে চাইনা, ওষুধ সরকারিভাবে সাপ্লাই থাকলে আমরা যেন পাই সে ব্যবস্থার জন্য অনুরোধ করেন। গতকাল বৃহস্বপতিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খুমেক হাসপাতালে প্রসুতি বিভাগে লেবার ইউনিট-৪ এ সরেজমিনে গিয়ে এ সব তথ্য তুলে ধরেন রোগীরা। জানা যায়, ওই বিভাগে অনুমোদন শয্যা সংখ্যা ২৮টি এবং অতিরিক্ত শয্যা সংখ্যা রয়েছে ১২ টি। বৃহস্পতিবার রোগী ভর্তি হয় ২২ জন। এর আগে রোগী ভর্তি ছিলো ৪৭ জন। ওই দিন রোগী ছ্ড়াপত্র পায় ১৭ জন। এছাড়া স্বেচ্ছায় রোগীরা ছ্ড়াপত্র নেন ৪ জন। ওই দিন রোগী ভর্তি ছিলো ৪৮ জন। এ ব্যাপারে খুমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: মো: হুসাইন শাফায়াত বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ওই সব ওষুধগুলো যাতে রোগীরা পায় সে ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছি। আশাকরি রোগীরা এ ভোগান্তীতে রেহাই পাবে। খুমেক হাসপাতাল প্রসুতি বিভাগ লেবার ইউনিট-৪ এর ইনচার্জ অনামিকা জেসমিন বলেন, ইনডেন্ট নিয়ম অনুযায়ী শনিবার কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর হবে এবং রোববার ওই ওষুধগুলো পাওয়া যাবে। জরুরি ভিত্তিতে কোন রোগীর ওষুধ লাগলে সেক্ষেত্রে পরিচালকের স্বাক্ষরে তোলা যায় কিন্তু তেমন কোন নির্দেশনা পাইনি। তিনি বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে রোগীরা ইনজেকশন সেফট্রিয়াক্সো টু-গ্রাম, ইনজেকশন ওমেপ্রাজল (১০০ মি:) এবং ইনজেকশন নেলিপসিন ইনজেকশনগুলো পাচ্ছে না । এসব ওষুধ রোগীদের দিতে পাচ্ছি না। এছাড়া অন্যসব ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। গর্ভবতী অবস্থায় খিচুনি রোগীদের ইনজেকশন নেলিপসিন প্রতিদিন ৬ বার দিতে হয় এবং ইনজেকশন সেফট্রিয়াক্সো টু- গ্রাম চিকিৎসা অনুযায়ী দুই বার দেওয়া লাগে। লেবার ইউনিট-৪ এর ইনচার্জ অনামিকা জেসমিন বলেন, আমাকে ফাসানোর জন্য একটি পক্ষ উঠে পড়ে লাগছে। তারা ষড়যযন্ত্র করে আমার নামে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। উল্লেখ্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রসুতি গাইনী বিভাগের লেবার ইউনিট-৪ এর ক্লাশ রুম থেকে বিপুল পরিমান তিন প্রকার ইনজেকশন (ওষুধ) জব্দ করে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। ওষুধগুলো হচ্ছে ইনজেকশন সেফট্রিয়াক্সো দুই গ্রাম ১০০ পিস, ইনজেকশন ওমেপ্লাজল (১০০ মি:) ১১০ পিস এবং ইনজেকশন নেলিপসিন ১২০ পিস। এগুলো ফোম দিয়ে মোড়ানো থাকা অবস্থায় ছিলো। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য কমিটি গঠন করেছেন। ওই কমিটিকে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পর থেকেই রোগীরা ওইসব ইনজেকশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।