চার্জশীটভুক্ত আসামী সবুজ মাদকসহ গ্রেফতার : বিচার শেষ পর্যায়
খালিশপুরে কলেজ ছাত্র হাসিব হত্যা মামলা

২৭ আসামীর মধ্যে অধিকাংশই মাদকের সাথে জড়িত
স্টাফ রিপোর্টারঃ নগরীর খালিশপুরে আলোচিত কলেজ ছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজ (২৫) হত্যা মামলা চার্জশীটভুক্ত আসামী মোঃ সবুজ হোসেন ওরফে জীবনকে(২৫) পুলিশ মাদকসহ গ্রেফতার করেছে। দৌলতপুর থানা পুলিশ বুধবার বিকেলে পাবলা কবিরের বটতলা এসিআই ভবনের সামনে থেকে ৩০ পিস ইয়াবাসহ তাকে গ্রেফতার করে। তার সাথে আরো একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় এসআই আলিমুজ্জামান বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। সে ছাত্রলীগ কর্মী হাসিব হত্যা মামলার ২৪নং চার্জশীটভুক্ত আসামী। গ্রেফতারকৃত সবুজ হোসেন ওরফে জীবন নগরীর বাস্তহারা কলোনীর বাসিন্দা মৃত: বাহারুল হোসেনের ছেলে। হাসিব হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শেষের দিকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা চলছে। ইতোমধ্যে ২৭জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। মামলাটি খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন-৩ নং আদালতে বিচার চলছে। চার্জশীটভুক্ত ২৭ জন আসামীর মধ্যে প্রায় সকলেই জামিনে বের হয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। আসামীরা মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িয়ে নতুন করে কারাগারে যাচ্ছে। এতে করে নিহতের স্বজন ও স্বাক্ষীরা আতংকের মধ্যে দিন যাপন করছেন। আর জীবনের নিরাপত্তার অভাবে মামলার বাদী ও নিহতের পিতা হাবিবুর রহমান শিকদার এলাকা ছেড়েছে। নিহতের স্বজনরা এমনই কথাগুলো বলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাসিব হত্যার ঘটনায় ২০ আগস্ট’২০ তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে সিএমএম আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীটভুক্ত আসামীরা হলো-কবির হোসেনের ছেলে সৈকত(৩২), রুনু হাওলাদারের ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বি (২২), আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমীন রহমান শিখার ছেলে রওশন আনিজি অন্তু (৩৩), নুরু ওরফে কানা নুরুর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২২), শাহিন আলম সেন্টুর ছেলে ইমদাদুল ইসলাম হৃদয় (২২), আমির খানের ছেলে আরিফ ওরফে চোরা আরিফ (২৯), আমির খানের ছেলে মোঃ মুন্না (২৩), আমিন উদ্দীনের ছেলে রফিকুল হাসান শাওন ওরফে আতাং বাবু (২৭), ফখরুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৬), সিদ্দিকের ছেলে মোস্তাক আহমেদ (২৭), মাইকেল সরদারের ছেলে মিঠাই হৃদয় (২৭), মোঃ শাকিলের ছেলে ফাইম ওরফে কালা ফাইম (২২), চুন্নুর ছেলে রুবেল (২৫), কবির হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান (২৮), বাহারুল ইসলামের ছেলে বাহারুল ইসলামের ছেলে সবুজ (২৫), কুদ্দুসুর রহমানের ছেলে আরাফাত (৩০), গোলাম মোস্তফার ছেলে তুষার (২৪), সিরাজুল ইসলাম নান্নুর ছেলে আশিকুর রহমান তুষার (২৬), জাকির হোসেনের ছেলে রাব্বী ওরফে নাটা রাব্বী (২৬), মনোয়ার হোসেনের ছেলে নাঈম বাবু ওরফে পয়েন্ট বাবু (২৬), আঃ জব্বারের ছেলে রায়হান (২৩), বেল্লাল হোসেনের ছেলে ইয়াসির রাব্বী ওরফে নাটা জুয়েল (২৬), কালামের ছেলে সালমান (২০), নাজমুল শেখের ছেলে সাকিব শেখ (২৩), আঃ রহমানের ছেলে নাইমুর রহমান ফাইম (২১), আঃ বারেক হাওলাদারের ছেলে রুনু হাওলাদার (৩৫), মুহিত মুনতাসির ইথুন (১৫)। তদন্ত প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, আ’লীগ নেত্রী শারমীন রহমান শিখার ছেলে রওশন আনিজি অন্তুর নেতৃত্বে হাসিবকে হত্যা করা হয়। নিহতের স্বজনরা জানান, লোমহর্ষক এ হত্যা মামলার আসামীরা জামিনে এসে এলাকায় মহড়া দিচ্ছে। মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। নানাভাবে হয়রানী করার চেষ্টা করছে। আসামীদের মধ্যে দু’জন আরাফাত ও অন্তুকে স্বেচ্ছাসেবকলীগের পদ দেয়া তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। খুনিদের ভয়ে ভীত সন্ত্রাস্ত হয়ে নিহতের স্বজন ও স্বাক্ষীরা অনেকেই এলাকা ছেড়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৯ আগষ্ট রাত ৯ টার দিকে এলাকার মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্ক সংলগ্ন ক্রিয়েটিভ কার্টস এ্যন্ড কফি হাউজের মধ্যে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে তৈয়্যেবা কলোনীর বাসিন্দা ও মিল শ্রমিক মোঃ হাবিবুর রহমানের ছেলে হাসিবুর রহমান নিয়াজকে। এ সময় তাকে বাঁচানোর জন্য দু’যুবক যোবায়ের ও রানা এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। হত্যাকান্ডের ভিডিও ফুটেজটি ভাইরাল হয়। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা হাবিবুর রহমান ঘটনার পরের দিন বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।