স্থানীয় সংবাদ

মোংলায় বিপর্যস্ত রপ্তানীযোগ্য চিংড়ি শিল্প : সাড়ে ১৬ কোটি টাকার ক্ষতি

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি ঃ ঘেরে ভাইরাস জনিত রোগ, ঘূর্ণিঝড় রেমাল’র তান্ডব ও চলতি অতিবৃষ্টির ফলে ত্রি-মুখী বিপর্যয় নেমে এসেছে মোংলার চিংড়ি চাষি ও ঘের মালিকদের মাঝে। বন্যার দিনে মোংলা উপকুলীয় এলাকার বাধ ভেঙ্গে তলিয়েছিল ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজারেরও বেশী চিংড়ি ঘের ও প্রকল্পের পুকুর, মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার। অভাবের ফলে ঘেরের ভেড়ি সংস্কার ও মাছ ছাড়া সহ ঘুরে দাড়াতে সরকারী সহায়তার দাবী ক্ষতিগ্রস্থদের। নতুন করে চিংড়ি চাষ শুরু করতে না পারলে রপ্তানী বানিজ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাবের আশংকা করছে সচেতন নাগরিক সমাজ। মৎস্য বিভাগ বলছে, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এ চিংড়ি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারী সহায়তা ও প্রনোদনার জন্য তালিকা তৈরী করে পাঠানো হয়েছে উর্ধতন কর্তৃৃপক্ষের কাছে। মোংলা উপজেলার এলাকার মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানীযোগ্য একটি বড় শিল্প হলো চিংড়ি শিল্প। মোংলাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকার চাষকৃত বাগদা ও গলদা চিংড়ি এ দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে সরকার। প্রতি মৌসুমের শুরুতেই ঘেরে ভাইরাস জনিত রোগের ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হয় ঘের মালিকদের। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে ৭/৮ ফুট পানি বৃদ্ধির ফলে মোংলায় যায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমির ৫ হাজার চিংড়ি ঘের। ধার-দেনা করে তৈরী করা ঘের থেকে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ভেসে গেছে কয়েকশ মন বাগদা ও গলদা চিংড়ী সহ সাদা মাছ। এতে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে মোংলা উপজেলার মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা। এবারের ঘুর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির মধ্যে পড়েছে এ অঞ্চলের মৎস্য চাষিরা। একদিকে ঘেরে ভাইরাস, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিবৃষ্টি, কোন দিকেই কাটিয়ে উঠতে পারছে না এখানকার ঘের মালিকরা। সরকারী সহায়তা পেলে ঘেরগুলো পুনঃসংস্কার করে নতুন ভাবে ঘুরে দাড়াতে পারবে এ শিল্পের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ঠারা। মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, দেশের রপ্তানী যোগ্য সাদাসোনা খ্যাত এ চিংড়ি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে পাঠানো হয়েছে। প্রনোদনা সহ সরকারী সহায়তার চেষ্টা চলছে বলে জানায় মোংলা উপজেলা এই মৎস্য কর্মকর্তা। মোংলা নাগরিক সমাজের সভাপতি শেখ মোঃ নুর আলম বেেলন, মোংলা উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় রেমাল’র ৪০ ঘন্টার তান্ডবে চিংড়ি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ি একটি রপ্তানীমুখী শিল্প, সরকার এ খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। উপক’লীয় এলাকার এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারের বড় পরিকল্পনা থাকার জরুরী। উল্লেখ্য মোংলা উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ৮ হাজার ৫শ চিংড়ি ঘের ও পুকুর রয়েছে। এখানে বছরে প্রায় ৯/১০ হাজার মেট্রিক টন বাগদাঁ ও গলদা চিংড়ি এবং ১৫ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন সাদা মাছ চাষ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button