স্থানীয় সংবাদ

যশোর নড়াইল সড়কে টেন্ডারের নামে জীবিত ও সতেজ গাছ কর্তনের অভিযোগ

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারসহ পাঁচজন আটক

মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে ঃ যশোর জেলা পরিষদের কাছ থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে নড়াইল সড়কে ঝুঁকিপূর্ন মরা ও অকেজো প্রাচীনতম বিভিন্ন প্রজাতির গাছ টাকার লটে সতেজ ও জীবিত গাছ কাটার সময় ইউএনও’র উপস্থিতিতে আনিসুর রহমান নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে আটক করে কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। সে মেসার্স রাকিব এন্টার প্রাইজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাকিব হাসানের ম্যানেজার। আনিসুর রহমানকে সোপর্দ করার পর তার বিরুদ্ধে মামলা না নিয়ে মেসার্স রাকিব হাসান বিভিন্ন মহল থেকে তদ্ববীর চালাচ্ছে আনিসুর রহমানকে ছাড়ানো জন্য। ঘটনাটি বুধবার ১০ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টায়। তাছাড়া, মেসার্স রাকিব এন্টার প্রাইজের বিরুদ্ধে জেলা পরিষদের কাছ থেকে সড়কের গাছ কেনার নামে বহুবিধ অভিযোগ উঠেছে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানাগেছে,মেসার্স রাকিব এন্টার প্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার প্রেমচারা গ্রামের বাসিন্দা রাকিব হাসান মেসার্স রাকিব এন্টার প্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানের নামে জেলা পরিষদের আহবানকৃত টেন্ডাররের মাধ্যমে যশোর শহনের মণিহার এলাকা থেকে নড়াইলগামী মহাসড়কের ভায়না তারাগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ন ৪৫৬টি প্রাচীনতম মেহেগুনী,রেন্ট্রি ও সেগুন গাছের লট পান। টেন্ডার পাওয়ার পর ওই সড়কের নির্দিষ্ট স্থানের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ন মেহেগুনী,রেন্ট্রি ও সেগুন গাছ কর্তন শুরু করেন। বুধবার ১০ জুলাই সকাল থেকে রাকিব এন্টার প্রাইজের ম্যানেজার আনিসুর রহমান,৪ জন গাছ কাটার শ্রমিক নিয়ে সড়কের ঝুমঝুমপুর বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্পের সামনে আনুমানিক ১১ ফুট প্রস্থ ও লম্বার একটি মেহেগুনী জীবিত সতেজ গাছ কর্তনের জন্য গাছের গোড়া খুচে করাত দিয়ে কাটতে শুরু করেন। জীবিত ও সতেজ গাছ কাটার খবর পেয়ে বিজিবি’র কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে ঘটনা প্রত্যক্ষ করে জেলা প্রশাসককে ফোনে বিষয়টি জানান। জেলা প্রশাসক যশোর সদরের ইউএনওকে সরে জমিনে যেয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। সদরের ইউএনও ঝুমঝুমপুর বিজিবি’র ক্যাম্পের সামনে উল্লেখিত ঝুঁকিপূর্ন হিসেবে উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে টেন্ডারে পাওয়া গাছের কাছে এসে দেখেন মেহেগুনী জীবিত ও সতেজ গাছ থেকে তৎক্ষনিক চারজন শ্রমিক ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আনিসুর রহমানকে তার অফিসে নেন। পরে সেখানে জেলা পরিষদকে অবহিত করেন। জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার আল আমিন খবর পেয়ে ইউএনও অফিসে যান। সেখানে যেয়ে তিনি বিষয়টি অবহিত হন। সদরের ইউএনও তার অফিসে নেওয়া ম্যানেজার আনিসুর রহমান ও ৪জন শ্রমিককে জীবিত সতেজ গাছ কাটার বিষয়টি জানতে চান। এক পর্যায় ৪জন শ্রমিককে মুচলেকায় ছেড়ে দেন। আনিসুর রহমানকে কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য থানার অফিসার ইনচার্জকে জানান। পরে ইউএনও বহনকারী গাড়ীতে ম্যানেজার আনিসুর রহমানকে কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়। অপরদিকে, জানাগেছে, মেসার্স রাকিব এন্টার প্রাইজ যশোর ঝিনাইদহ সড়কে টেন্ডারের মাধ্যমে পাওয়া নুসরাত এন্টার প্রাইজের কাছ থেকে জেলা পরিষদ থেকে পাওয়া গাছের লট কিনে সাবাড় করে ফেলেছেন। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, যশোর নড়াইল,ঝিনাইদহ,বেনাপোল,খুলনা,মণিরামপুর, সাতক্ষীরা ও মাগুরা সড়কের রাস্তা প্রসস্থর নামে ওই সব সড়কের রাস্তার দু’পাশে প্রাচীনতম মেহেগুনী,রেন্ট্রি ও সেগুন গাছ ঝুঁকিপূর্নর নামে কর্তনের মহোৎসব চালায় জেলা পরিষদের তালিকাভূক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যশোরের পরিবেশবিদরা খবর পেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্র্থে গাছ কর্তনের বিরুদ্ধে হাইকোর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্টে একটি রিট করেন। যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে গাছ কাটা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো এক হয়ে হাইকোর্টে রিট করে একটি আদেশ নেন তাদের অনুকুলে। আদেশে ঝুঁকিপূর্ন,শুকনো,মরা গাছ কর্তনের আদেশ থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জীবিত ও সতেজ গাছ লটের মধ্যে ফেলে লাল রং লাগিয়ে কর্তনের তালিকায় তুলে কর্তন শুরু করেন। এভাবে সড়ক অঞ্চলের হাইওয়ে সড়কগুলোতে জেলা পরিষদের আওতায়ধীন প্রাচীনতম বিভিন্ন গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে উজাড় করে ফেলছেন টেন্ডারের নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে মেসার্স রাকিব এন্টার প্রাইজের সত্বাধিকারী রাকিব হাসানের মুঠো ফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, জেলা পরিষদ থেকে মনিহার থেকে নড়াইল সড়কের ভায়না তারাগঞ্জ পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের ৪৫৬টি গাছের লট তিনি প্রাই আড়াই কোটি টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করেছেন। টাকাও জেলা পরিষদকে পরিশোধ করেছেন। জেলা পরিষদ টেন্ডারে পাওয়া গাছ সনাক্ত করে দিলে তার শ্রমিকরা গাছ কর্তন করেন। তবে বিজিবি ক্যাম্পের সামনে যে গাছ শ্রমিকরা কর্তন শুরু করেন সেটাও তার টেন্ডারে কেনা তবে হাইকোর্টে আদেশে কাটার অনুমতি নেই। ভূল বশত তার শ্রমিকেরা গাছটি কর্তনের জন্য গোড়া খুঁচে কর্তন শুরু করেন। টেন্ডারে পাওয়া গাছ কর্তনের ব্যাপারে পরিবেশবিদরা হাইকোর্টে রিট করলে হাইকোর্ট গাছ কর্তনের উপর নিষেধাজ্ঞা দেন। পরে তিনি হাইকোর্ট থেকে একটি আদেশ নিয়ে আসেন সড়কে যে গাছ ঝুঁকিপূর্ন,শুকনো ও মরা যা চলাচলত যানবাহন ও মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ন সেগুলো কাটার আদেশ। তিনি হাইকোর্টের আদেশ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসক,সদরের ইউএনও দপ্তরে জমা দেন। পরে গাছ কাটার কমিটির মাধ্যমে সনাক্ত করা গাছ কাটেন তিনি। তার ম্যানেজার আনিসুর রহমানকে মুক্ত করতে তিনি জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানানোর ফলে আনিসুর রহমানকে অপরাধ শিকার করায় মুচলেকায় মুক্তি দেয়া হয়েছে। #

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button