স্থানীয় সংবাদ

৩৫২টি প্রতিষ্ঠানের নিকট কেসিসির পাওনা ১৯ কোটি টাকা বিজ্ঞাপনি কর

# ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গুরুত্ব দেয়নি ব্যবসায়ীরা
# আগামী সপ্তাহে বিজ্ঞাপন কর আদায়ে অভিযান

খলিলুর রহমান সুমন ঃ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) বিজ্ঞাপনি কর ১৯ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। ৩৫২টি বিজ্ঞাপনি সংস্থার বিপরীতে এ টাকা বকেয়া পড়েছে বলে সংশ্রিষ্ট সূত্রে প্রকাশ। ১৫ দিনের সময় বেধে বিজ্ঞাপনদাতাদের আল্টিমেটাম দিলেও তেমন আমলে নেয়নি ব্যবসায়ীরা। তারই জের ধরে কেসিসি আগামী সপ্তাহে বকেয়া বিজ্ঞাপন কর আদায়ের স্বার্থে বিলবোর্ড অভিযানে নামবেন বলে জানান কেসিসির লাইসেন্স অফিসার রবিউল আলম। তিনি জানান, আল্টিমেটাম দেয়ার পর বিজ্ঞাপনি সংস্থার কোন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের বকেয়ার নাম মাত্র টাকা পরিশোধ করেছে। এ সময় কেসিসি ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৯শত ৪২ টাকা বিজ্ঞাপনি কর আদায় করেন। কেসিসি গত অর্থ বছরে (২০২৩-২৪) ৭৮ লাখ ৯৮ হাজার ১১৫ টাকা বিজ্ঞাপনি কর আদায় করেন। তবে খুবই সামান্য। কেসিসি সূত্রে প্রকাশ, বকেয়া বিজ্ঞাপনী কর আদায়ের জন্য কেসিসি গত ১২ জুন বিজ্ঞাপনদাতাদের চিঠি দেন। ওই চিঠিতে ব্যবসায়ীদের বকেয়া পরিশোধের সময় সীমা ১৫ দিন বেধে দেয়া হয়। ইতোমধ্যে সেই সময় সীমা শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী বকেয়া কিছু টাকা পরিশোধ করেছে। যার পরিমাণ দাড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৯শত ৪২ টাকা। ১৯ কোটি ৪ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৯ টাকা বকেয়ার মধ্যে যত সামান্য পরিশোধ কেসিসিকে বেশ হতাশ করেছে। কেসিসির নথি সূত্রে প্রকাশ, ৩৫২টি বিজ্ঞাপনি সংস্থার মধ্যে ভিউফাইন্ডার এ্যাডঃ নামক বিজ্ঞাপনী সংস্থার কাছে কেসিসির বকেয়া অর্থের পরিমাণ ৩ কোটি ২৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪৫৮ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, এই সংস্থা কতিপয় কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে নিজেদের ফায়দা হাসিলের স্বার্থে এত টাকা বকেয়া ফেলেছে। এরকম আরো অনেকে রয়েছে। এরা মূলত একটি চক্র। যারা কেসিসিকে কর না দিয়ে কতিপয় কর্মকর্তা যোগসাজসে দীর্ঘ দিন ধরে এ কাজটি করে আসছে বলে সূত্রটি জানায়। সূত্র মতে, ২০১৬ সাল থেকে সরকার বিজ্ঞাপনি কর বৃদ্ধি করে। বৃদ্ধিহারে বিল করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞাপনি সংস্থা পুরাতন রেটে বিল দিয়ে আসছেন। যা আইনগতভাবে কেসিসি গ্রহণ করতে পারছে না। এমন কি তারা এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করেছে। এ দলে ১২ জন বিজ্ঞাপনী ব্যবসায়ী রয়েছে। তবে এবার আর রক্ষা হবে বলে মনে হয় না বলে সূত্রটি জানায়। বিল বোর্ড বিজ্ঞাপন দাতাদের নিকট প্রেরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়, অত্র নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে কেসিসির পাওনা সমুদয় বকেয়া বিজ্ঞাপন কর পরিশোধ করতে অনুরোধ করা হলো। ব্যর্থতায় সিটি কর্পোরেশন কর বিধির ১১ ধারা অনুযায়ী বিজ্ঞাপন অপসারণসহ সরকারি পাওনা আদায়ের লক্ষে আপনি / আপনাদের অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক, নিলাম করণ দ্বারা বিধিমতে খরচসহ আদায় করা হবে। ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন প্রধান রাজস্ব অফিসার (সিআরও) সানজিদা বেগম। তিনি বলেন, চিঠি দেয়ার পর কিছু ব্যবসায়ী বকেয়া পরিশোধ করেছেন। বাকীদের বিরুদ্ধে কেসিসির বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, একই ব্যবসায়ী কেসিসির কাছে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও অন্য নামে বিলবোর্ড স্থাপন করে বিজ্ঞাপন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি খুবই খারাপ কাজ। বিষয়টি তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button