ক্যামেরা ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে শেষ হলো ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সুন্দরবনের বাঘ গণনা
*** ৮ ই অক্টোবর ফলাফল ঘোষণা করবেন বন উপদেষ্টা
*** সুন্দরবনে বাঘ বৃদ্ধির আশা সংশ্লিষ্টদের
*** প্রতি তিন বছর পর পর বাঘ গণনা অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই না : মন্তব্য পরিবেশবিদদের
আনিছুর রহমান কবির ঃ সুন্দরবন এ ১ হাজার ২০০টিা বেশি ক্যামেরা ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে বাঘ গণনা শেষ। আগামী ৮ই অক্টোবর ঢাকা থেকে প্রকাশ করা হবে ফলাফল। এখন ফলাফলের অপেক্ষা। তবে এবার জরিপে সুন্দরবনের বাঘ বৃদ্ধি পাবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাঘ গণনা নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও অবশেষে একাধিকবার সময় পেছালেও আগামী ৮ ইং অক্টোবরের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করতে যাচ্ছেন বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা । ২০১৫ ও ২০১৮ সালের পর তৃতীয়বারের মতো খুলনা ফরেস্ট অফিস সুন্দরবনের বাঘ গণনা শুরু করেছিল ২০২২ সালে । ৪৮৪ টি ট্র্যাকিং ক্যামেরার মাধ্যমে ৩৬ কোটি টাকার বাঘ গণনা ও বাঘ সংরক্ষণ এই দুইটি মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে টানা তিন বছর গণনা শেষে এবার বাঘ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা খুলনার পরিবেশ আন্দোলনকারীদের বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, আমরা বাঘের সংখ্যা শুনে ইতিপূর্বে হতাশ হয়েছি। তবে এবার আমরা আন অফিসিয়ালভাবে জেনেছি যে বাঘের সংখ্যা সুন্দরবনে বেড়েছে। এখন মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে ।বাঘ যে আমাদের রক্ষাকবচ তা সাধারণ মানুষ বুঝেছে এজন্য বাঘ দেখলে এখন আর মানুষ পিটিয়ে মারে না ।এ কারণেই বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বেস্ট এর প্রধান নির্বাহী পরিচালক মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেন , আমরা এখন অপেক্ষায় আছি কবে ফলাফলটা পাবো এবং আশা করি এবারও বাঘ বৃদ্ধি পাবে। বাঘ যে প্রকৃতির রক্ষাকবচ সুন্দরবন সহ প্রকৃতিকে রক্ষা করছে বাঘ এই সচেতনতার কারণেই প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বাঘের সংখ্যা। তবে তিনি বলেন, প্রতি তিন বছর অন্তর কোটি কোটি টাকা ব্যয় বাঘ গণনা না করে এই টাকা দিয়ে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে কাজ করলে আরো উপকৃত হবে । তবে প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর বাঘ গণনা করার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না তিনি। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী এডভোকেট মোঃ বাবুল হাওলাদার বলেন, প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনা এর জন্য কোটি কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ এগুলোর প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এখানে বড় ধরনের অর্থ অপচয় হচ্ছে। জরিপের নামে বাঘ গণনার নামে লুটপাট হচ্ছে দেশের কোটি টাকা ।এগুলো বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন বাঁচাতে ১০ বছর পর পর একবার গননা করলে সুন্দরবনের উপর চাপ কমবে। সুন্দরবন পশ্চিম বন এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন ,ইতিপূর্বে বিশ্ব ব্যাংক সহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘজরিপ হলেও ,এ বছর দেশীয় প্রযুক্তি ও দেশের অর্থায়নে খুলনার চারটি রেঞ্জেই ক্যামেরার ট্রাকিং এর মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। তবে ২০১৫ এবং ১৮ সালের তুলনায় এ বছর বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশ্বস্ত করেন খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা। এছাড়া ঝড় বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের থেকে বাঘ কে রক্ষা করার জন্য বাঘের কেল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে সুন্দরবনে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারিতে ছিল ১১৪টি। এবছর বাঘ বৃদ্ধি পাবে এবং দুর্নীতি ও অনিয়মসহ বাঘ গণনার নামে টাকা অপচয় বন্ধ হবে এমনটাই প্রত্যাশা খুলনাবাসীর।