স্থানীয় সংবাদ

খুলনার তেরখাদায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

# আশুলিয়া থানার সামনে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে তেরখাদার হামিদ শেখ নিহতের ঘটনায় মামলা #

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনার তেরখাদায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলালসহ ৪৪ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়া থানার সামনে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন খুলনা তেরখাদার পানতিতা গ্রামের মোঃ জাফর শেখের ছেলে মোঃ হামিদ শেখ। এঘটনায় নিহতের মা রাশিদা বেগম বাদী হয়ে তেরখাদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য, বাগেরহাট-১ শেখ হেলাল, ঢাকা-১৯ (সাভার) সাবেক সংসদ সদস্য ডাক্তার এনামুর রহমান, আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগ সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত পাপ্পু, সাবেক সংসদ সদস্য, ঢাকা-১৯ (সাভার)তালুকদার মোঃ তৌহিদ মুরাদ সাভার পৌর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল হালিম, সাভার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান, সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম রাজীব, সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলা, ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগ সভাপতি সাইদুল ইসলাম, ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ও সাংসদ ঢাকা ২০ (সাভার)সভাপতি বেনজীর আহমেদ, ঢাকা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানসহ ৪৪জন। থানায় দায়েরকৃত মামালার বিবরণীতে জানা গেছে, গত জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কারের উদ্দেশ্যে বৈষম্যবিরোধী যৌক্তিক ছাত্র আন্দোলনে সারা দেশে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ১৬ই জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে মোঃ হামিদ শেখ ১৭ই জুলাই থেকে রাজপথে নেমে সক্রিয়ভাবে আন্দোলন শুরু করে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকার পতনের পূর্বক্ষণে আশুলিয়া থানার সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতা মিছিল করে। ছাত্র জনতার অধিকার আদায়ের সেই যৌক্তিক মিছিল দমন করার জন্য আসামীদের পরিকল্পনা এবং সরাসরি নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে উল্লেখিত আসামীসহ আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগের কয়েকহাজার কর্মী সরাসরি গুলি বর্ষণ করে। আসামীদের ছোড়া গুলিতে জাফর শেখের মাথা ও বুক গুলিবিদ্ধ হয় এবং তার গুলিবিদ্ধ দেহকে আসামীরা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাহসী পদক্ষেপে ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। আন্দোলনকারীরা হামিদকে সাভার গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে হামিদের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে তার পরিবার খুলনা থেকে রওনা হয়ে রাত ৩টায় ওই হাসপাতালে পৌছাই। হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ বুঝে নিয়ে ৬ আগস্ট সকাল ১০টায় নিজগ্রামে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে নিহত হামিদের দাফন সম্পন্ন হয়। আসামীগণ শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সরাসরি নির্দেশে সাভার ও আশুলিয়া এলাকার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালের (সাংসদ বাগেরহাট ২) নেতৃত্বে এবং শেখ হেলালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মোস্তফা কামাল খোকন পাশার তত্ত্বাবধানে খুলনা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাছাইকৃত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আন্দোলন দমাতে নগদ অর্থের যোগান, অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ এবং নিজেরা উপস্থিত থেকে গুলি বর্ষণ, দেশীয় অস্ত্র, হকিস্টিক এবং রাম দা নিয়ে হামিদসহ আন্দোলকারীদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং গনহত্যা চালায়। এতে করে হামিদসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী নিহত ও আহত হয়। এই আন্দোলনে চার শতাধিক লোক চোঁখ হারিয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছে এবং অঙ্গহানীর ঘটনা ঘটেছে সহস্রাধিক লোকের।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button