স্থানীয় সংবাদ

দিঘলিয়ায় রাস্তার কার্পেটিং কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার

# এলাকাবাসীর ক্ষোভ,

সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে ঃ খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের চন্দনীমহল বাজার মোড় বকুলতলা পূজা মন্দীর থেকে মল্লিকপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত এলজিইডির রাস্তা নির্মাণে নজিরবিহীন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমাণের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও বিটুমিন পরিমাণে কম দেওয়া হয়েছে। সিডিউল অনুযায়ী কোনো কাজ হচ্ছে না। রাস্তার কার্পেটিং কাজ শেষ না হতেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে ও রাস্তা দেবে গেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে উদাসীন রয়েছেন এলজিইডির কার্য সহকারি আসাদুজ্জামান ও উপসহকারী প্রকৌশলী এনামুল হক। এমনকি নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করায় উক্ত এলজিইডি কার্য সহকারী এলাবাসীর সাথে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হন এবং হুমকি ধামকি দেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়। এসব কারণে রাস্তা নিয়ে গ্রামের সুবিধাভোগী মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এমনকি তারা রাস্তার কাজ নিম্নমানের হওয়ার ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী, এলজিইডি খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী ও দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলামকে অবহিত করেছেন। উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের চন্দনীমহল বাজার খেয়াঘাট থেকে মল্লিকপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত ১ হাজার ৫১৫ মিটার রাস্তার কাজের মূল্য ধরা হয়েছে ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৯৫৫ টাকা। রাস্তায় নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিং কাজ করা হয়েছে এবং পরিমাণে কম ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া রাস্তায় পিচ ঢালার পূর্বে ভালোভাবে পরিস্কার করা হয়নি, মাটির উপরেই পিচ ঢেলে রুলার করা হয়েছে। রুলারও ঠিকমত করা হয় নি। সরে জমিনে পরিদর্শনে এমনটিই দেখা গেছে। জানা গেছে, সৈয়দ আবরার ও সৈয়দ আমীর রেজা নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজটি করছেন তেরোখাদা উপজেলার লষ্করপুর গ্রামের মোঃ আলমগীর ফকির নামের এক ঠিকাদার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাঁদা-মাটি পড়ে রাস্তায় খোয়ার অস্তিত্ব প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। তারপরেও গত কয়েকদিন পূর্ব থেকে রাস্তা ভাল ভাবে পরিস্কার না করে তার ওপর কার্পেটিং কাজ শুরু করা হয়।এতে রাস্তার কার্পেটিং কাজে অনিয়মের অভিযোগ তোলে এলাকাবাসি। রাস্তাটি জায়গায় চওড়া জায়গায় চিকন করা হয়েছে। জায়গায় পুরু জায়গায় পাতলা কার্পেটিং ঢালায় দেওয়া হয়েছে। গাইড ওয়াল ভেঙ্গে ইট পাশের গর্তে পড়ে থাকলেও সেগুলো মেরামত করা হয়নি। গাইড ওয়ালের ইট নড়বড় করছে। এলাকাবাসী সরেজমিনে গোটারাস্তা ঘুরে সাংবাদিকদের দেখান। এসময় একাধিক ব্যক্তি জানান, আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছে। যে কারণে নিম্নমাণের কাজ হলেও তারা আর কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পায় নি। এমনকি দুপুরে ও বন্দের দিন কাজ করেছে। এলাকাবাসী আরো জানান, কার্পেটিংয়ে নিম্নমাণের বিটুমিন ব্যবহার, পিচ পাথর পরিমাণে কম দেওয়া ও রাস্তা ভালো ভাবে পরিস্কার না করে মাটির উপরেই পিচ ঢেলে রুলার করা হয়েছে। যে কারণে কার্পেটিং কাজের পরের দিন থেকেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ফলে এই রাস্তা নিয়ে এলাকাবাসীর যে স্বপ্ন ছিল, তা ঠিকাদারের নিম্নমাণের কাজের জন্য সেই স্বপ্ন বিলীন হতে চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আরো বলেন, কাজে ব্যাপক ঘাপলা হয়েছে।
কাজটি নিম্নমানের হচ্ছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার ********* জানান, কাজটি নিম্নমানের কথা স্বীকার করে বলেন রাস্তা ঠিক করে দেওয়া হবে। আর কাজটি নিম্নমানের হয়নি। রুলারের কারণে সমস্যা একটু হয়েছে। জায়গায় পুরু বেশী হয়েছে, জায়গায় কম হয়েছে। সম্পূর্ণ কাজটিই সমস্যার ব্যাপার তিনি অস্বীকার করেন। তিনি গোপনে লোকজনের অভিযোগের পর রাস্তার কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন বলে জানা যায়। রাস্তা পরিস্কার না করেই মাটির উপরে পিচ ঢেলেছে বিটুমিন কম ব্যবহার করেছে এবং কাজে চরম অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজ করেছে এমন কথার উত্তরে উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী আবু তারেক সাইফুল কামাল বলেন, ঠিকাদারের সাথে আমার কথা হয়েছে কার্পেটিং তুলে পুণরায় সিডিউল মোতাবেক কার্পেটিং করে দেবে। নিম্নমানের কাজ করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button