দিঘলিয়ায় বিপুল উৎসাহে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক

সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে ঃ
দীর্ঘদিন ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় এবার কৃষক আমনের দাম ভালোই পেয়েছে। সে কারণে দিঘলিয়ার কৃষকরা উৎসাহ উদ্দীপনায় বোরো আবাদ শুরু করেছে। জমি প্রস্তুত করতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষরা। জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ উঠানো, ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপণ করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কৃষকরা। গত মৌসুমের আমন ধানের ভালো ফলন প্রতি একরে প্রায় ৬০ মণ ও মূল্য প্রতিমণ ১২শ থেকে ১৩শ টাকা পেয়ে কৃষকদের বোরো আবাদে এবার আগ্রহ বেড়েছে। এ দিকে সকালের শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা অবধি বোরোর জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ বা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন। কেউ জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার বিতরণ কাজে ব্যস্ত। কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন। আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউ বা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণ করছেন খেতে। দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলায় ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর উপজেলায় ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৪০৩০ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৮৭০ হেক্টর। দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের চাষি সাদিকুল, রুম্মান শেখ ও ইমাদুল হক বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে আমাদের। এবার আমন চাষে করে আমরা লাভবান হয়েছি। সেই আশায় পুরোদমে আবার বোরো আবাদ শুরু করে দিয়েছি।
দিঘলিয়া ইউনিয়নের দিঘলিয়া এলাকার কৃষক ঈসা শেখ, তৈয়ব আলী ও শফিকুল মোল্লা জানান, গত আমন মৌসুমে ব্রি-জাতের সুবর্ণ-৪, ব্রি -২৮, ব্রি-১০০, ব্রি-১০২, হীরা, জনকরাজ, রাজলক্ষ্মী, শক্তি-২ ধানের ফলন ও বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে আবাদ করতে তারা বেশি আগ্রহী। অন্যান্য বছর কোল্ড ইনজুরিতে পচন লেগে বীজ চারা নষ্ট হয়ে যেতো। কিন্তু এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো চারাও বেশ ভালো হয়েছে। লাখোহাটি এলাকার কৃষক আঃ সালাম, নূর ইসলাম শেখ, ইয়াসিন শেখ, মনিরুল ইসলাম জানান, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়। আশা রাখি বোরো আবাদ হলে বেশি লাভবান হবো। দিঘলিয়া কৃষি অফিসার মোঃ কিশোর আহমেদ বলেন, এ উপজেলায় সবেমাত্র বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের আবহাওয়ার গড় সর্বনিম্ন ১৭ এবং সর্বোচ্চ ২৮ বিরাজ করছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবং গভীর নলকূপগুলো সচল হলে খুব শিগগিরই বোরো ধান রোপণ শেষ হবে এবং আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


