খুলনার ছাত্র মেডিকেলে দেশ সেরা

স্টাফ রিপোর্টার : কোন ধরনের প্রাইভেট শিক্ষক বা ধারাবাহিক কোচিং না করেই মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় দেশ সেরা হয়েছেন খুলনার সুশোভন বাছাড়। তবে তিনি শুধুমাত্র একটি কোচিং সেন্টারে এডমিশন কোচিংয়ে ভর্তি ছিলেন। মূলত স্কুল শিক্ষক বাবার গাইডলাইন এবং বাসায় বসে বিভিন্ন ধরনের বই পত্র অধ্যয়ন করেই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সুশোভন এ সাফল্য অর্জন করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা সুভাষচন্দ্র বাছাড়। সন্তানের এ সাফল্যে বিস্মিত এবং আবেগ আপ্লুত তিনি।
দেশ সেরা সুশোভন বাছাড় খুলনা নগরীর বয়রা আজিজের মোড় এলাকার স্কুল শিক্ষক সুভাষচন্দ্র বাছাড়ের একমাত্র সন্তান। তার মা একজন গৃহিণী।
বাবা সুভাষচন্দ্র বাছাড় রোববার রাতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তিনি রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে অনলাইনে তার সন্তানের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারেন। এ সময় মেরিট লিস্টে তার ছেলের নাম এক নম্বরে থাকায় তিনি অনেকটা বিস্মিত হন। একই সঙ্গে আবেগ আপ্লুতও হন। প্রথম দিকে বিশ্বাস করতে না পারলেও বারবার যাচাই করে নিশ্চিত হন তিনি। সুভাষচন্দ্র বাছাড় বলেন, তিনি খুলনা মহানগরীর টিএন্ডটি স্কুলের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সুশোভন বাছাড় তার একমাত্র সন্তান। সে তারই স্কুলে ক্লাস ওয়ান থেকে এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। প্রতিটি শ্রেণীতেই প্রথম স্থান এবং বৃত্তি লাভ করে। একই সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ ফাইভ অর্জন করে। সর্বশেষ খুলনার সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয় কৃতিত্বের সঙ্গে। এর পরই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
বাবা সুভাষচন্দ্র বাছাড় আরও বলেন, স্কুল জীবন থেকে এই পর্যন্ত তার সন্তানকে কোন কোচিংয়ে পড়াতে হয়নি। এমনকি বাসায় কোন প্রাইভেট শিক্ষকও ছিল না। পিতা হিসেবে তিনিই তাকে গাইড করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ের বেশি বেশি বই কিনে দিয়েছেন। আর সন্তানও স্কুল-কলেজে শ্রেণিকক্ষে খুব একটা উপস্থিত না থাকলেও বাসায় বসে অধিক সময় এবং কঠোর পরিশ্রম করে অধ্যায়ন করেছে। তাতেই সাফল্য এসেছে।
তিনি বলেন। ছেলে দেশ সেরা হবেন এটা তার প্রত্যাশা ছিল না। তবে তার প্রাপ্ত নম্বর ৯০ এর বেশি হবে বলে প্রত্যাশা ছিল তার। সেখানে ৯০. ৭৫ নম্বর অর্জন করেছে সুশোভন।
একজন অভিভাবক হিসেবে সন্তানের ফলাফলে তিনি গর্বিত এবং উচ্ছ্বসিত। এর পেছনে কঠোর অধ্যবসায় কাজ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। অন্য শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন কঠোর পরিশ্রম এবং বেশি বেশি বই পড়লে সাফল্য আসবেই যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তার সন্তান সুশোভন বাছাড়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ১৯টি কেন্দ্রের একাধিক ভেন্যুতে এ পরীক্ষা হয়।
এ বছর আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৬১টি। কোটাসহ মেডিকেলে মোট আসন ৫ হাজার ৩৮০টি। এ হিসাবে এ বছর একটি আসনের পরিবর্তে ২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় সরকারি-বেসরকারি মেডিকেলের জন্য ৬০ হাজার ৯৫ জনকে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন সুশোভন বাছাড়। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন সানজিদ অপূর্ব বিন সিরাজ নামের এক শিক্ষার্থী এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন শেখ তাসনিম ফেরদৌস নামের এক শিক্ষার্থী। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।