খালিশপুরে পারিবারিক শত্রুতার বিরোধ ধরে দিবালোকে প্রকাশ্যে দিনমজুরকে কুপিয়ে হত্যা

# খুনের ঘটনায় জড়িত সুদকারবারী নাজমাকে আটক করেছে পুলিশ #
# আসামী গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে, মা ও ৩ ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ খালিশপুরে পারিবারিক শক্রতা ও দ্বন্দ্বের বিরোধে মো. সবুজ খাঁ (৬৫) নামের দিনমজুর খুনের শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে খালিশপুর হাউজিং বাজারস্থ ১১নং নূরানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিমপাশে জনৈক এক ব্যবসায়ীর বাড়ির গেটের সম্মুখে এ খুনের ঘটনা ঘটে। নিহত সবুজ খাঁ খালিশপুর লাল হাসপাতালের পিছনে সোমার বাড়ীর ভাড়াটিয়া মৃত। ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাজমা বেগম নামের এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খালিশপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী।
সূত্রে জানা গেছে, খালিশপুর লাল হাসপাতালের পিছনে সোমার ভাড়া বাড়ীতে নিহত সবুজ খাঁ পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে তিনি খালিশপুর হাউজিং বাজারস্থ ১১ নং, নূরানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিমপাশে জনৈক এক ব্যবসায়ীর বাড়ির গেটের সম্মুখে আসলে তার বোন নাজমা বেগম ও তার ৩ ছেলে মিলে ধারালো দা দিয়ে সবুজের শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে। এতে তার শরীরে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। মূমুর্ষ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁচ্ছায় এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। পাশাপাশি অন্য টিম খুমেক হাসপাতালে পৌঁচ্ছে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন। পুলিশ ইতোমধ্যে ওই ঘটনায় জড়িত নাজমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে নিয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের বিভিন্ন টিম কাজ করছে। ঘটনাস্থলের একটি সূত্র বলছে, নিহত সবুজ খাঁ ও আটক নাজমা বেগম আপন ভাই- বোন। গত, রবিবার নিহত সবুজ ও পরিবারের লোকেরা মিলে ছোটবোন নাজমার স্বামীকে মারধর করে। ওই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে খালিশপুর হাউজিং বাজারস্থ নুরানিয়া প্রাইমারী স্কুলের সম্মুখে নাজমার বাড়ীর সামনে এলে তিনি এবং তার ৩ ছেলে মিলে প্রথমে সবুজকে মারধর করে এবং একটা পর্যায়ে ধারালো দা শরীরের বিভিন্ন অংশ কোপ দিয়ে মারাত্বক জখম করে। মূমুর্ষ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পুলিশের হেফাজতে থাকা নাজমা ও তার ৩ ছেলের বিরুদ্ধে বহু ওই এলাকায় অভিযোগের শেষ নেয়। আটক নাজমা ওই এলাকার একজন চিহিৃত সুদ কারবারী হিসাবে পরিচিত। তার সুদের ফাঁদে পা দিয়ে অনেক অভাবে মানুষ ও পরিবার নিঃশেষ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া তার ৩ ছেলে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের আমলে দোসরদের ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে লিপ্ত থাকাসহ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাধারন মানুষের প্রতি জুলুম ও নির্যাতন করেছে। সুদের কারবারী করে বিপুল অর্থের মালিক হওয়া ও ক্ষমতার দাপটের কারণে তাদের ব্যাপারে ওই এলাকার মানুষ মুখ খুলতে ভয় পানও বলে ওই সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাউজিং ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, গত রবিবার পরিবারিক দ্বন্দ্ব নিয়ে নিহত ওই ব্যক্তি ও তার ছেলেরা মিলে নাজমার স্বামীকে মারধর করে। ওই বিষয় নিয়েই গতকাল নাজমাও তার ছেলেরা তাকে (সবুজকে) কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ বিষয়ে খালিশপুর থানায় কর্মরত এসআই মিলন জানান, কুপিয়ে হত্যার ঘটনার খবর শুনার পর খুমেক হাসপাতালে যায়। প্রাথমিক সুরতহাল সম্পন্ন করি। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী খুনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এই খুনের ঘটনা ঘটে। প্রায় উভয় পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব হতো শুনেছি। খুনের ঘটনায় সম্পৃক্ত নিহতের বোনকে আমরা জিজ্ঞাসাদের জন্য আটক করেছি, বাকী জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।



