ঘাতক ফয়সালের পিতা-মাতা গ্রেফতার বাড়িঘর ভেঙ্গেচুরে জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা

# দিঘলিয়ার মিল শ্রমিক পুত্র শিশু জিসান হত্যাকা- #
# ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি #
সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে ঃ দিঘলিয়ার চাঞ্চল্যকর শিশু জিসান (৭) হত্যাকা-ের মূলহোতা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আটক ফয়সালের পিতা ও মাতাকে গতকাল রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার বিক্ষুব্ধ জনতা ফয়সালের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। এলাকাবাসী এই শিশু জিসান হত্যার বিচারের দাবীতে দেয়াড়া খেয়াঘাট মোড়ে মানববন্ধন করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া
গ্রামের চাঞ্চল্যকর শিশু জিসান হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ হত্যাকা-ের মূলহোতা ফয়সালের পিতা জিএম হান্নান (৫৬) ও মাতা মাহেনুর বেগম (৪৫)কে নগরীর খালিশপুর মেট্রো থানা এলাকা থেকে শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ রয়েছে ফয়সাল শিশু জিসানকে হত্যার পরে পরিবারের সহায়তায় লাশ বস্তাবন্দি করে নিজ বাড়ির আঙ্গিনার পুব-উত্তর কোণে পুঁতে রাখা হয়। হত্যাকা-টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ফয়সালকে খালিশপুরের রিহ্যাব সেন্টারে ভর্তি করে। অপরদিকে শিশু জিসান হত্যার প্রতিবাদে দৌলতপুর খেয়াঘাটে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক সামাজিক ও সুশীল সমাজ, জুট টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ফয়সালের বাড়িঘর ভাংচুর করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী শেখ আবু জাফর, মোল্যা নাজমুল হক, অধ্যাপক মুনিবুর রহমান, জিয়াউদ্দিন মিল্টন, মোল্লা রাজু আহমেদ, মাহামুদুল হাসান মিঠু, আব্দুল কাদের জনি, মোহাম্মদ আলী টুটুল, হালিম খলিফা, রাজীব আহমেদ, সোহেল জাফর মঈন। মানববন্ধনে বক্তারা শিশু জিসান হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
নির্মম এ হত্যাকা-ে এলাকার মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। আটক ফয়সাল ও তার পিতা জিএম হান্নান এবং মাতা মাহেরুন বেগমকে গতকাল রবিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, শিশু জিসান ঘটনার দিন ৯ অক্টোবর আছরের আজানের সাথে সাথে পার্শ্ববর্তী মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করে। নামাজ শেষে আর বাড়িতে ফেরেনি। মসজিদের মুসল্লীরা জানিয়েছেন, জিসান মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতো। মাইকে আজান শুনলেই মসজিদে ছুঁটে এসে বড়দের পাশে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতো।
দিঘলিয়া থানা সেকেন্ড অফিসার এসআই লিটন কুমার মন্ডল বলেন, শিশু জিসানের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এঘটনায় নিহত জিসানের পিতা মোঃ আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে রবিবার দিঘলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৪ তাং ১২/১০/২০২৫।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দেয়াড়া জুট টেক্সটাইল মিলের ম্যাকানিক্যাল মিস্ত্রি আলমগীর হোসেনের শিশু পুত্র জিসান নিখোঁজ হয়। শনিবার দেয়াড়া গ্রামের জিএম হান্নান হোসেনের বাড়ির উঠানে গর্তে পুঁতে রাখা মৃতদেহ হাত পা বাঁধা অবস্থায় ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ । এ ব্যাপরে দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ এইচ এম শাহীন এ প্রতিবেদককে জানান, গ্রেফতারকৃত ঘাতক ফয়সাল, পিতা জিএম হান্নান ও মাতা মেহেরুন বেগম আদালতে আদালতে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়ার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে হত্যার কারণ এখন পর্যন্ত জানায়নি।



