জাতীয় সংবাদ

হেফাজতে বডিবিল্ডারের মৃত্যু : পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

প্রবাহ রিপোর্টঃ পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে বডি বিল্ডার মিস্টার বাংলাদেশ ফারুক হোসেনের মৃত্যুর অভিযোগে বংশাল থানার অফিসার ইনচার্জ মাইনুল ইসলামসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে করা মামলা ডিবি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, আগামী ২৮ মার্চ ডিবি পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে মঙ্গলবার ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী মামলার আবেদন করেন। মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- বংশাল থানার সাব-ইন্সপেক্টর ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদ। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ফারুক হোসেন খাজা দেওয়ান সিং লেন লালবাগের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন। এর এক ঘণ্টা পর ফারুক হোসেন স্ত্রী হ্যাপীকে ফোন দিয়ে জানান, তাকে সন্দেহজনকভাবে কায়েতটুলী ফাঁড়ির কতিপয় পুলিশ গ্রেপ্তার করে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। দুই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে তিনি সেখানে ছুটে যান। দেখেন, ফারুককে পুলিশ সদস্যরা মারধর করে আটকে রেখেছে। হ্যাপী সেখানে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের পা ধরে তার স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার আকুতি জানান। তখন ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ফারুক অনেক বড় ক্রিমিনাল, তাদের গালিগালাজ করেছে। এমনিতে ছাড়া যাবে না। ওকে ছাড়তে হলে এক লাখ টাকা লাগবে। তখন হ্যাপী জানান, তার স্বামী সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শোয়েবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। আগে বডি বিল্ডার ছিলেন মিস্টার বাংলাদেশ হিসেবে। তিনটি ছোট ছোট সন্তান, তার ইনকামেই সংসার চলে। তাকে ছেড়ে দিন। পরে এক লাখ থেকে কমিয়ে তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় আসামিরা ফারুককে ব্যাপক মারধর করে। হ্যাপী তখন মাইনুল হোসেনের হাত-পা ধরে আকুতি মিনতি করে স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় না। তারা তাকে পরদিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলে। পরদিন হ্যাপী কোর্টে যান স্বামীর খবর নিতে। সেখানে অনেক কষ্টে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। স্ত্রীকে মারধরের কথা জানান ফারুক। তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলে। ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাজার মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানতে পারেন হ্যাপী। ৫-৬ টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে যান। ১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি হ্যাপীকে জানান, ফারুক মারা গেছেন। হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তিনি স্বামীল লাশ দেখতে পান। ফারুকের গলায়, বুকে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button