জাতীয় সংবাদ

মাহে রমজানের সওগাত-১১

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন
মাহে রমজানের আজ একাদশ দিবস। মাগফিরাত ক্ষমা লাভের দশকের আজ সূচনা দিবস। আজ আমরা আলোচনা করবো চোখের রোজা সম্পর্কে। চোখেরও রোজা আছে। আর তা হচ্ছে, হারাম, অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে চোখকে ফিরিক্সে রাখা। এর বিপরীত অবস্থা হচ্ছে সকল ভালো ও নেক কাজের প্রতি চোখ খুলে রাখা এবং পুংখানুপুংখ রূপে তা দেখা। মহান আল্লাহ মানুষকে অনেক কাজ থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওক্সার আগে চোখ তা দেখে এবং পরে মন প্রলুব্ধ হক্স। ফলে মানুষ নিষিদ্ধ কাজটি করে ফেলে। উদাহরণ হচ্ছে, মাহরাম নক্স এমন স্ত্রী লোকের প্রতি না তাকানোর নির্দেশ রক্সেছে। তাদের সৌন্দর্য উপভোগ করলে শেষ পর্যন্ত তা অবৈধ যৌন আচরণ পর্যন্ত নিক্সে যেতে পারে। অথচ এই দুটো কাজই হারাম। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সুরা নূর-এর ৩০-৩১ আক্সাতে বলেছেন, হে নবী, আপনি মুমিনদের বলে দিন তারা যেন নিজের চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জা স্থানকে হেফাজত করে। হজরত আলীর এক প্রশেহ্মøর জবাবে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলইহি ওক্সাসাল্লাম উœরে তাকে বলেন, তোমার চোখ অবনত রাখ। যে ব্যক্তি নিজের চোখ অবনত রাখে না কিংবা নিষিদ্ধ জিনিসের উপর থেকে দৃষ্টি ফিরিক্সে রাখে না সে কমপক্ষে চার ধরনের ক্ষতি ও বিপর্যক্সের সম্মুখীন হক্সে থাকে। প্রথম লাগামহীন দৃষ্টির কারণে তার মন আহত হক্স ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হক্সে পড়ে। চোখ নামক বিষাক্ত ছুরির আঘাতে মন ব্যথিত, অশান্ত ও অস্থির থাকে। দ্বিতীক্সতঃ চোখের দেখা জিনিসের নাগাল না পাওক্সাক্স মন কষ্ট পাক্স ও সর্বদা আফসোস, দুশ্চিন্তা ও উœেজনার মধ্যে সমক্স কাটাক্স। তৃতীক্সতঃ আল্লাহর ইবাদতের স্পৃহা চলে যাক্স, আনুগত্যের স্বাদ নষ্ট হক্সে যাক্স এবং পাপ কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হক্স। সর্বশেষ হচ্ছে নিষিদ্ধ বস্তু দেখা ও ইজ্জত -আবরু লংঘনের পরিণামে বিরাট ম্লনাহ হক্স এবং কঠোর পাপে লিপ্ত হক্স। পরকালে আল্লাহ এই খোলা চোখের উপর শীশা ঢেলে শাস্তি দেবেন। চোখ হচ্ছে উœম এক শিকারী। তাকে অনিক্সন্ত্রিত রাখলে সে যে কোন সমক্স পাপের বস্তু শিকার করবে এবং অন্তর ও ঈমানকে নষ্ট করবে। অপর দিকে চোখ অবনত রাখলে এবং নিষিদ্ধ জিনিস থেকে দৃষ্টি ফিরিক্সে রাখলে আল্লাহর আনুগত্য বৃদ্ধি পাক্স। আর তা হচ্ছে বড় নেক কাজ। মন নিরাপদ থাকে, মনে শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করে এবং যে কোন সমক্স অন্যাক্স কাজে হোঁচট খাওক্সার আশংকা থাকে না। ফেতনা-ফ্যাসাদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হক্স, বিপদ থেকে নিরাপদ থাকা যাক্স এবং ম্লনাহ থেকে বাঁচা যাক্স। তাকওয়া অনুসরণের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার অন্তওে জ্ঞান,প্রজ্ঞা ও নেক কাজের তাওফিক সৃষ্টি হয়। মুমিনের অন্তরে ভাল-মন্দ পার্থক্য করার ক্ষমতা সৃষ্টি হয়। যারা চোখ খোলা রাখে তাদের ঈমানি অন্তর মরে যায় এবং সে অন্তরে পাপের আগাছা-পরগাছা জন্মে। মাহে রমজান হচ্ছে প্রশিক্ষণের মাস। এই মাসে চোখকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারলে তা বছরের বাকি এগার মাসে দিশারী হয়ে থাকবে। এই মাসে আল্লাহ আমাদের চোখকে তার দিক নির্দেশনা মোতাবেক অবনমিত ও নিয়ান্ত্রিত রাখার তাওফীক দিন। আমীন!

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button