রাজশাহীর তাপমাত্রা উঠল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে

প্রবাহ রিপোর্ট : রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ মৃদু তাপপ্রবাহ গতকাল বৃহস্পতিবার মাঝারি তাপপ্রবাহে রূপ নেয়। চলতি রমজান মাসে কাঠফাটা রোদ ও গরমে পদ্মাপাড়ের মানুষগুলোর নাভিশ্বাস উঠেছে। শেষ চৈত্রের খরতাপে সাধারণ মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে। একটু হিমেল হাওয়া আর স্বস্তির বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মতো সবাই তাকিয়ে আছে আকাশ পানে। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আকাশে কিছুটা মেঘের ছিঁটেফোঁটা দেখা গেলেও কাঙ্ক্ষিত সেই বৃষ্টির দেখা নেই। প্রায় সপ্তাহজুড়েই রাজশাহীতে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। প্রথম দিকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। এরপর শুরু হলো মাঝারি তাপপ্রবাহ। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের থার্মোমিটারের পারদ উঠতে উঠতে ৩৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে। আর এতে নাকাল হয়ে পড়েছে নগরজীবন। দুপুরের পর প্রধান প্রধান সড়কও ফাঁকা হয়ে যায়। তবে খেটেখাওয়া দিনমজুররা এই আগুনমুখো আবহাওয়ার মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবার ও পরিজনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। গাছের ছায়াও যেন উষ্ণ হয়ে উঠেছে। ঘরে বাইরে কোথাও এক রত্তি স্বস্তি নেই। প্রতিটি ভবনের ট্যাপকল দিয়েই বের হচ্ছে ফুটন্ত পানি। আর শহরের টিনশেড বাড়িগুলো যেন পরিণত হয়েছে অগ্নিকু-ে। ভেতরে থাকা মানুষগুলো তাই যারপরনাই দুর্ভোগে পড়েছেন। গরমের তীব্রতা অব্যাহত থাকায় রাজশাহীতে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে হিট স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগও। আর দুপুরের পর বাতাসের আদ্রতা কমে যাচ্ছে। আদ্রতা কমার কারণে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দিচ্ছে। গরমেও ফাটছে ঠোঁট এবং হাত-পা। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. গাওসুজ্জামান জানান, রাজশাহীতে গতকাল বৃহস্পতিবার এই মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ২৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১ এপ্রিল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন ৩১ মার্চ ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর আবার একদিনের ব্যবধানে ফের চড়লো তাপমাত্রার পারদ। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) মো. রহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে বাতাসের আদ্রতাও। বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে বাতাসের আদ্রতা ছিল ২৩ শতাংশ এবং ভোর ৬টায় ছিল ১শ শতাংশ। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে রাজশাহীর ওপর দিয়ে কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। আর টানা সময় ধরে ভারী বৃষ্টি ছাড়া এই তাপমাত্রা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। উল্টো আগামী কয়েকদিনে রাজশাহীর সর্বোচ্চ এই তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।