বিএনপির টপ টু বটম সবাই দুর্নীতিবাজ : কাদের
প্রবাহ রিপোর্ট : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘টপ টু বটম দুর্নীতির বরপুত্র’ আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির টপ টু বটম সবাই দুর্নীতিবাজ। এখন দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে। গতকাল শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ‘তারেক রহমানকে ভালো মানুষ সাজানোর জন্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতি’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি তাদের নির্বাচিত ছয় জনকে সংসদে পাঠালেন (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর)। এখন যদি ফখরুল সংসদে যায় তাহলে তারেকের ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে যাবে। এ রকম একটা সাইকোলজি থেকে ফখরুলকে পার্লামেন্টে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে তারেক রহমান এক ধমকে। তিনি বলেন, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা হঠাৎ করে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়েছে। কারণ কী? কারণ হলো যে ওই ৭ দফায় আছে দ-প্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, দুর্নীতিবাজ কোনো ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না। ফখরুল তাকে ভালো মানুষ সাজাচ্ছেন, তাহলে ধারা বাদ দিলেন কেন? দুর্নীতিবাজের যে ধারা আর দ-প্রাপ্ত ব্যক্তির যে ধারা সেটায় তারেক রহমান দোষী হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য হঠাৎ করে তারেকের নির্দেশে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনে এনে জমা দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল নিজেই তো স্বাধীন নন। তার দলে কোনো পর্যায়ে কোনো সম্মেলন হয় না, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। তারেকে রহমান বিদেশে থাকলে বিএনপি স্বাধীন স্বত্তা নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে পারবে সেটা আমরা বিশ্বাস করি না। অস্ত্র মামলা, দুর্নীতির মামলায় তারেকের সাজা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেকের আর কত সাজা হবে? তার তো সাজা হয়েছে। শাস্তি হয়ে গেছে। এখন তার শাস্তি ভোগ করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন। তো তাকে ভালো মানুষ সাজানোর চেষ্টা করার কোনো কারণ নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে বিএনপি আসবে না, নির্বাচনে বিএনপি যদি আসতো গতবারের মতো খারাপ ফলাফল হতো না। এটা আমি মনে করি। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে অপজিশনের একটা ভোট ছিল। কিন্তু তারেক রহমান রহমান মনে করে, যদি এই অবস্থায় বিএনপি ভালো করে এটার সুফল তো আমি পাচ্ছি না, তারেক রহমান তো পাচ্ছে না। এখন তার অনুপস্থিতিতে অন্য কেউ নেতা হবে! ফখরুল সাহেব নিজেও অনুধাবন করতে পারছেন যে তাকে কীভাবে তারেকের ধমকের ওপর চলতে হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা আজ এসব কথা বলে অন্ধকারে ঢিল ছোড়েন, ১৫ আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল? বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন ছিল? আর ১৫ বছর পরে কেমন হয়েছে? আমাদের ভুলত্রুটি আছে এটা আমরা স্বীকার করে নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অতীতের ভুলত্রুটি থেকে আমরা শিক্ষা নেবো। বিএনপি আমলে কত সন্ত্রাসী ছিল প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্নীতিবাজ বেনজীরের জায়গায় কোহিনূর, আশরাফুল হুদা এইসব লোককে আইজিপি বানানো হয়েছিল। এদের দুর্নীতির গল্প শুনলে শিউরে উঠতে হয়। বিচার কি হয়েছে? বিএনপির নেতারা জনে জনে দুর্নীতি করেছিল, লুটপাট করেছিল। তার বিচার কি হয়েছিল? বিএনপি কি তাদের কোনো নেতার বিচার করার সৎ সাহস দেখাতে পেরেছে যেটা শেখ হাসিনা করে দেখিয়েছেন! এদিকে গাড়ির চাপ থাকলেও রাজধানীসহ কোথাও কোনো যানজট নেই বলে দাবি করেন সেতুমন্ত্রী। পশুবাহী গাড়িগুলো যেখানে সেখানে রেখে যানজট সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান তিনি। পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়কে চাপ আছে, যানজট নেই। স্মরণকালের সেরা সড়ক শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই হয়েছে। পশুবাহী গাড়িগুলো যেখানে সেখানে রেখে যানজট সৃষ্টি যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ এড়ানো কঠিন। গত ঈদের তুলনায় এবার ভোগান্তি হবে না বলে আশ্বাস দেন তিনি। রাস্তার কারণে যানজট হবে এমন পরিস্থিতি নেই। পশুর গাড়ি এবং পশুর হাটের কারণে কিছু যানজট হয়। পশুবাহী গাড়ি এবং পশুর হাট যত্রতত্র বসিয়ে জনদুর্ভোগ যেন না বাড়ানো হয় সে ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া সড়কে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি যেন না ঘটে সেজন্য মনিটরিং বাড়ানোর নির্দেশনাও দেন মন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।