জাতীয় সংবাদ

তারা ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে : ইতালির রাষ্ট্রদূতকে প্রধানমন্ত্রী

প্রবাহ রিপোর্ট : ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সহিংসতায় জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব মো. নুর এলাহি মিনা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা (জামায়াত-শিবির) ছাত্রদের শিল্ড হিসেবে ব্যবহার করেছে। জামায়াত-শিবির, বিএনপি আগুন দিয়ে পোড়ানো, গণহত্যায় অভ্যস্ত। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন ধ্বংসসহ সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। উপ-প্রেস সচিব মো. নুরএলাহি মিনা বলেন, ইতালির রাষ্ট্রদূততে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সহিংসতাকারীরা বাংলাদেশের যে আধুনিকায়নের প্রতিকগুলো আছে সেগুলোকে তারা টার্গেট করে হামলা করেছে। ইতালির রাষ্ট্রদূত জনগণের সম্পদ ধ্বংস এবং জীবনহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপে আহতদের দেখতে হাসপাতাল যাওয়ার কথা এবং তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রদূত বলেছেন সম্পদ ধ্বংস বা গোটা বিষয়ের যেন বিচার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রধানমন্ত্রী যেভাবে হ্যান্ডেল (সামাল) করেছেন ইতালির রাষ্ট্রদূত তার প্রশংসা করেছেন। হোলি আর্টিজানের পরে সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে এবং বাস্তবায়ন করেছে ইতালির রাষ্ট্রদূত তারও প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব জানান, ইতালির রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন সাম্প্রতিক এই ঘটনার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সরকারের সন্ত্রাস দমন কার্যক্রম এগিয়ে যাবে। বিভিন্ন বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিতে ইতালি আগ্রহী বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেছেন, যখন জনগণ বিভিন্ন বিক্ষোভ করে বা কোনো ক্র্যাকডাউন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, এ ক্ষেত্রে ইটালিয়ান পুলিশের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইতালির পুলিশ ধাপে ধাপে এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এই বিষয়ে তারা বাংলাদেশ পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিতে চায়। পুলিশের প্রশিক্ষণ বিষয়ে ইতালির প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন জানিয়ে নুরএলাহি মিনা বলেন, উনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন যে এটা ভালো প্রস্তাব। আমরা সামনের দিনগুলোতে এটা কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে অবশ্যই কথা বলবো। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সঙ্গে ইতালির ঐতিহাসিক এবং চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত অ্যান্তেনিও অ্যালেসান্দ্রো। রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতালিতে যে দুই লাখের মতো প্রবাসী আছে তারা একটা ব্রিজ (সেতুবন্ধন)। তারা উভয় দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাবেন। বিশেষ করে জ¦ালানি, এসএমই, স্পেস টেকনোলজি, জাহাজ নির্মাণ সেক্টরে কাজ করবেন। বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে বৈধ অভিবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ইতালির রাষ্ট্রদূত। সৌজন্য সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button