ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার দায় নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন পলক

প্রবাহ রিপোর্ট : কোটা ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চলমান আন্দোলন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার বন্ধে ব্যর্থতা এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার সব দায়ভার নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নাটোরে নিজ বাসভবনে জাতীয় শোক দিবস স্মরণে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে তিনি এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পলক বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে যদি আমার কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ইন্টারনেট ব্যাহত হওয়া এবং সামাজিক মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়া দায় আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, কখনও তাদের প্রতি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েই সেটার সমাধান করতে হবে। আমরা তাদের প্রতি কঠোর শাসনের পথ বেছে না নিয়ে তাদের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে স্নেহ-মমতা নিয়ে বসে কথা শুনলে আমার বিশ্বাস, অবশ্যই এই ভুল বোঝাবুঝি দূর হবে। এতে ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত সফল হবে না। এদিকে গতকাল শুক্রবার দেশের সব মোবাইলফোন নেটওয়ার্ক অপারেটরের ইন্টারনেট সেবায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টেলিগ্রাম বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার পর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে অবশ্য সব ধরনের সেবা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। গত বুধবার দুপুরে ১৪ দিন পর দেশে সচল হয় ফেসবুক-টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। ওই দিন সকালে মেটার (ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম) সিঙ্গাপুরস্থ এশিয়া সদর দপ্তরের সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সরকারের বৈঠক হয়। এদিন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, বৈঠকে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন, মিস-ইনফরমেশন, ডিস-ইনফরমেশন বিষয়ক যেকোনো অস্থিরতা নিরসনে ফ্যাক্ট চেকিং জোরদারের উদ্যোগ গ্রহণসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। গত ২৮ জুলাই সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ের কিছু ভিডিও কন্টেন্টের ব্যাপারে ফেসবুক, ইউটিউব ও টিকটককে চিঠি দিয়ে তলব করে সরকার। চিঠিতে তাদের কাছে বেশ কিছু বিষয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের নাশকতার ঘটনার পর সারা দেশে গত ১৭ জুলাই রাতে মোবাইলফোনে এবং পরদিন বৃহস্পতিবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়। এর পাঁচদিন পর গত ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে চালু হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৮ জুলাই সারা দেশে মোবাইলফোনে ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। আর শুক্রবার দুপুর থেকে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু হয়।