শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান অস্থিরতা নিরসনে ‘ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালন
প্রবাহ রিপোর্ট : আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ঠেকাতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে আগামী এক সপ্তাহব্যাপী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে আগামী এক সপ্তাহ এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম শক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত সোমবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। দেশব্যাপী চলমান আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ্ব নিরসনের লক্ষ্যে ১৯টি ছাত্র সংগঠনের নেতারা ওই বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন। নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা আগামী এক সপ্তাহ জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ পালনের ঘোষণা দিয়েছি। এই সময়ে ছাত্র সংগঠনগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাবে এবং সেখানে আমাদের একতা ও সংহতির বার্তা পৌঁছে দেবে। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে আমাদের যে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই সেটি বোঝানোর জন্য আমরা এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক মেলবন্ধন সুদৃঢ় করার চেষ্টা করবো। ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, মিটিংয়ে প্রথম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামীকাল (গতকাল মঙ্গলবার) থেকে সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে ছাত্র সংহতি সপ্তাহ পালিত হবে। এই সপ্তাহে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দাবি জানানো হবে। সকল ছাত্র সংগঠনের নেতারা কলেজগুলোতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সহনশীল হয়ে ঝামেলা পরিহার করতে উদ্বুদ্ধ করবে। তিনি আরও জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সকল ছাত্র সংগঠনের নেতারা হিন্দুদের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, তারা কী চান সে বিষয়ে জানতে চাইবেন। জানা যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ডাকা হলেও অংশ নেয়নি গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সমন্বয়ক সালমান সিদ্দিকী বলেন, আমাদের ডেকেছে, তবে আমরা তাদের জানিয়েছি তাদের সঙ্গে আমরা আলাদাভাবে বসতে চাই। তবে তাদের দাবি আমাদের দাবি। কলেজগুলোর মধ্যে বিদ্বেষ ভাব দুর হোক, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধীরা কবে বসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের এখনও সময় জানায়নি। তবে আমরা জানিয়েছি দু-একদিনের মধ্যে বসতে চাই। সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের (নুর) সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) আহ্বায়ক মোল্লা রহমাতুল্লাহ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কাউসার আহমাদ, স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিশের সভাপতি মুহাম্মদ রায়হান আলী, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড, ইনকিলাব মঞ্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব ফাতিমা তাসনিম জুমা, কওমী ছাত্র ফোরামের নুর হোসাইন, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদে আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ, জাতীয় ছাত্র সমাজের (জাফর) মো. মেহেদি হাচান, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিশের সেক্রেটারি আশিকুর রহমান জাকারিয়া, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মুনতাসির মাহমুদ, জাতীয় ছাত্র সমাজের (পার্থ) সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।